জার্মানি কৃষি কাজের ভিসা - যোগ্যতা, খরচ ও আবেদন প্রক্রিয়া (বিস্তারিত তথ্য)
জার্মানি ইউরোপের অন্যতম উন্নত একটি দেশ, যেখানে প্রতি বছর হাজার হাজার বিদেশি
কাজ ও পড়াশোনার সুযোগ পেয়ে থাকে। দেশটিতে বিভিন্ন ধরনের ভিসা ব্যবস্থা চালু
রয়েছে, যেমন- স্টুডেন্ট ভিসা, ওয়ার্ক ভিসা, ট্যুরিস্ট ভিসা, ফ্যামিলি রিইউনিয়ন
ভিসা ইত্যাদি।
এর মধ্যে বিশেষভাবে জনপ্রিয় হচ্ছে কৃষি কাজের ভিসা, যা ২০২৫ সালে বাংলাদেশসহ
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শ্রমিকদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করেছে। যারা মৌসুমি বা
দীর্ঘমেয়াদে কৃষি খাতে কাজ করতে চান, তাদের জন্য এই ভিসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আপনারা যারা জার্মানি কৃষি কাজের ভিসা নিয়ে যেতে চান, তাদের জন্য আজকের এই
প্রবন্ধটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই, আর্টিকেলটি একটু সময় দিয়ে শুরু থেকে শেষ
পর্যন্ত মনোযোগের সঙ্গে পড়ুন।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ
জার্মানি কৃষি কাজের ভিসা ২০২৫
জার্মানি কৃষি কাজের ভিসা হলো এমন একটি বিশেষ ভিসা ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে যে
কোন বিদেশি শ্রমিকরা জার্মানির কৃষি খাতে মৌসুমি বা দীর্ঘমেয়াদে কাজ করার সুযোগ
পান। দেশটিতে কৃষি শ্রমিকের ঘাটতি পূরণের জন্য মূলত এ ভিসা চালু করা হয়েছে।
📌আরো পড়ুন👉মালয়েশিয়া কোন ভিসা ভালো 2025
বর্তমানে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের মানুষ এই ভিসার আওতায় সেখানে মাঠের কাজ,
ফল-সবজি সংগ্রহ, ফসল তোলা, পশুপালন কিংবা কৃষি সম্পর্কিত মৌলিক কাজে অংশ নিতে
পারেন। সাধারণত এই ভিসা কয়েক মাস থেকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বৈধ থাকে।
তবে, পরবর্তী সময়ে কাজের প্রয়োজন অনুযায়ী মেয়াদ বাড়ানো যেতে পারে। কৃষি কাজের
ভিসায় আবেদন করতে শারীরিকভাবে সক্ষমতা, বয়সসীমা, পাসপোর্ট, চুক্তিপত্র ও
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট থাকা আবশ্যক।
কম খরচে দ্রুত ইউরোপে কাজের সুযোগ পাওয়ায় এই ভিসা ২০২৫ সালে বিশ্বের অন্যান্য
দেশের ন্যায় বাংলাদেশিদের কাছে বিশেষভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।ত
জার্মানি কৃষি কাজের ভিসার যোগ্যতা ও শর্তাবল
জার্মানি কৃষি কাজের ভিসার জন্য বিশ্বের অন্য সকল দেশের ন্যায় নির্দিষ্ট কিছু
যোগ্যতা ও শর্ত পূরণ করতে হয়। যেমন-
- প্রথমত- আবেদনকারীর বয়স সাধারণত ১৮ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে হতে হবে এবং শারীরিকভাবে সক্ষম হতে হবে, কারণ কৃষি কাজের মধ্যে মাঠের কাজ, ফসল সংগ্রহ বা ভারী শ্রম থাকতে পারে।
- দ্বিতীয়ত- আবেদনকারীর একটি বৈধ মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট থাকতে হবে।
- তৃতীয়ত- নিয়োগকর্তার কাছ থেকে বৈধ চাকরির চুক্তিপত্র (Job Contract) থাকা আবশ্যক, যেখানে কাজের ধরন, সময়কাল, বেতন ও অন্যান্য সুবিধা উল্লেখ থাকবে।
এছাড়াও, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট, মেডিকেল সার্টিফিকেট এবং প্রাথমিক
শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্রও প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় ইংরেজি বা জার্মান
ভাষার মৌলিক জ্ঞান অতিরিক্ত সুবিধা হিসেবে গণ্য হয়।
ভিসার জন্য আবেদন করার সময় নির্দিষ্ট ফি প্রদান করতে হয় এবং দূতাবাসের
সাক্ষাৎকারে অংশ নিতে হয়। সব শর্ত সঠিকভাবে পূরণ করলে ২০২৫ সালে বাংলাদেশিরা
সহজেই জার্মানি কৃষি ভিসার মাধ্যমে বৈধভাবে কাজের সুযোগ পেতে পারেন।
জার্মানি কৃষি ভিসায় কী ধরনের কাজ পাওয়া যায়?
জার্মানি কৃষি ভিসায় মূলত কৃষি ও কৃষি-সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরনের শারীরিক শ্রমের
কাজ পাওয়া যায়। তবে, সবচেয়ে সাধারণ কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে, মাঠে ফসল রোপণ, আগাছা
পরিষ্কার, সেচ দেওয়া, সার ব্যবহার, ফসল তোলা ইত্যাদি।
এছাড়াও, মৌসুমি সময়ে ফল ও সবজি যেমন- আপেল, স্ট্রবেরি, আঙুর, আলু বা শসা
সংগ্রহের কাজও শ্রমিকদের করতে হয়। তাছাড়াও, গ্রীনহাউসে গাছের যত্ন, চারা রোপণ,
সবজি উৎপাদন ও সংগ্রহের কাজ থাকে।
পশুপালন খাতে যেমন- গরু, ভেড়া বা মুরগির খামারে খাবার দেওয়া,
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা এবং পশুর যত্ন নেওয়ার কাজও অন্তর্ভুক্ত। আবার কখনও
কখনও কৃষি যন্ত্রপাতি পরিষ্কার বা হালকা মেশিন ব্যবহার করার দায়িত্বও দেওয়া হয়।
এসব কাজ সাধারণত মৌসুমি হলেও, অনেক ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির মাধ্যমে
শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়। তাই, শারীরিকভাবে সক্ষম এবং শ্রমে অভ্যস্ত ব্যক্তিদের
জন্য এই ভিসা জার্মানিতে কাজের একটি বড় সুযোগ তৈরি করে।
জার্মানি কৃষি কাজের ভিসার জন্য আবেদন প্রক্রিয়া
জার্মানি কৃষি কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে ধাপে ধাপে কিছু প্রক্রিয়া
অনুসরণ করতে হয়। যেমন- প্রথমে একজন আবেদনকারীকে জার্মানির কোনো কৃষি খাতের
নিয়োগকর্তার কাছ থেকে চাকরির অফার বা চুক্তিপত্র সংগ্রহ করতে হবে।
📌আরো পড়ুন👉ওমান টুরিস্ট ভিসা পেতে কি কি লাগে
চুক্তিতে কাজের ধরন, সময়কাল, বেতন ও অন্যান্য সুবিধা উল্লেখ থাকবে। এরপর বৈধ
মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট, ছবি, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট, মেডিকেল রিপোর্ট,
শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্র এবং চাকরির চুক্তি সহ সব কাগজপত্র প্রস্তুত করতে
হবে।
পরবর্তী ধাপে আবেদনকারীকে ঢাকায় অবস্থিত জার্মান দূতাবাসে ভিসার আবেদন জমা দিতে
হবে। অনলাইনে অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করে নির্দিষ্ট দিনে সাক্ষাৎকারে অংশ নিতে হয়।
এ সময় প্রয়োজনীয় ফি জমা দিতে হয় এবং ভিসা অফিসার আবেদনকারীর যোগ্যতা যাচাই
করেন। সব কিছু ঠিক থাকলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ভিসা অনুমোদন দেওয়া হয়।
সবশেষে ভিসা হাতে পাওয়ার পর আবেদনকারী, জার্মানিতে গিয়ে নিয়োগকর্তার অধীনে
বৈধভাবে কাজ শুরু করতে পারেন। সঠিক কাগজপত্র ও নিয়ম মেনে আবেদন করলে ২০২৫ সালে
বাংলাদেশিদের জন্য এই সুযোগ অনেক সহজলভ্য হবে।
কৃষি কাজে জার্মানি যেতে কত টাকা লাগে?
জার্মানিতে কৃষি কাজ বলতে মূলত দুই ধরনের কাজের সুযোগ বোঝানো হয়:
- মৌসুমি কাজ: এটি সাধারণত ফল ও সবজি তোলার মতো স্বল্প সময়ের (যেমন ৯০ দিন পর্যন্ত) কাজ।
- স্থায়ী কাজ: এই ধরনের কাজের জন্য আপনার কৃষি বা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নির্দিষ্ট দক্ষতা বা ডিগ্রি থাকতে হবে।
যেহেতু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে মৌসুমি কৃষি কাজের ভিসা নিয়ে যাওয়ার
আগ্রহ বেশি দেখা যায়, তাই এই বিষয়ে খরচের একটি ধারণা দেওয়া হলো। মনে রাখবেন,
এখানে দেওয়া তথ্য একটি আনুমানিক হিসাব এবং বিভিন্ন খরচ পরিবর্তন হতে পারে।
১. ভিসা আবেদনের খরচ
ভিসা ফি: জার্মান ওয়ার্ক ভিসার জন্য ভিসা ফি সাধারণত €৭৫ ইউরো হয়ে থাকে।
বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ প্রায় ৯,০০০ থেকে ১০,০০০ টাকা।
ভিসা সেন্টার সার্ভিস ফি: ভিসা আবেদন জমা দেওয়ার জন্য VFS Global-এর মতো ভিসা
সেন্টারের মাধ্যমে যেতে হয়। এর জন্য একটি সার্ভিস চার্জ দিতে হয়, যা সাধারণত
৳৩,০০০ থেকে ৳৪,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়।
এপিএস সার্টিফিকেট ফি: সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে যারা জার্মানিতে উচ্চশিক্ষার
জন্য আবেদন করছেন, তাদের জন্য "একাডেমিক অ্যাসেসমেন্ট সেন্টার" (APS) থেকে একটি
সার্টিফিকেট নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যদিও এটি মূলত শিক্ষার্থীদের জন্য,
তবে কাজের ভিসার জন্যও অনেক ক্ষেত্রে এটি চাওয়া হতে পারে। এর খরচ প্রায়
৳২৭,০০০ থেকে ৳২৮,০০০ টাকা।
ভাষার পরীক্ষার খরচ: কৃষি কাজের জন্য জার্মান ভাষার খুব উচ্চ দক্ষতা প্রয়োজন
হয় না, তবে প্রাথমিক জ্ঞান (A1 লেভেল) থাকা ভালো। জার্মান ভাষার পরীক্ষার খরচ
প্রায় ৳৮,০০০ থেকে ৳১০,০০০ টাকা।
২. অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ
হেলথ ইনস্যুরেন্স: ভিসা আবেদনের জন্য এবং জার্মানিতে থাকার পুরো সময়ের জন্য
স্বাস্থ্য বীমা থাকা বাধ্যতামূলক। এর খরচ নির্ভর করে বীমার মেয়াদ এবং সুবিধার
ওপর। সাধারণত প্রতি মাসে €৫০-€১০০ ইউরো খরচ হতে পারে।
ব্লকড অ্যাকাউন্ট: যদি আপনি সরাসরি একটি নির্দিষ্ট চাকরির অফার নিয়ে না যান
এবং চাকরি খোঁজার ভিসা নিয়ে যান, তাহলে আপনার আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণ হিসেবে
একটি ব্লকড অ্যাকাউন্টে টাকা রাখতে হয়। কৃষি কাজের ক্ষেত্রে এটি সচরাচর
প্রয়োজন হয় না, তবে যদি প্রয়োজন হয়, এর পরিমাণ বছরে প্রায় €১২,০০০ ইউরো
(প্রায় ১৪-১৫ লাখ টাকা)।
এজেন্সি বা দালালের খরচ: এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং অনির্ভরযোগ্য খরচ।
যেহেতু জার্মানিতে কৃষি কাজের জন্য সরাসরি আবেদন করা কঠিন হতে পারে, তাই অনেকে
এজেন্সির সাহায্য নেন।
এই এজেন্সিরা ভিসা পাওয়ার জন্য মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে, যা সাধারণত ৳৫ লাখ
থেকে ৳১০ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এই পথে প্রতারিত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি।
তাই সরকারিভাবে অনুমোদিত এবং নির্ভরযোগ্য এজেন্সির সাহায্য নেওয়া উচিত।
উপরের খরচগুলো যোগ করলে দেখা যায় যে, যদি আপনি কোনো এজেন্সির সাহায্য ছাড়া এবং সরাসরি একটি চাকরির অফার নিয়ে যান, তাহলে আপনার মোট খরচ হতে পারে ১ লাখ থেকে ২ লাখ টাকা। তবে, যদি আপনি এজেন্সির মাধ্যমে যান, তাহলে তাদের সার্ভিস চার্জ সহ মোট খরচ ৫ লাখ থেকে ১০ লাখ পর্যন্ত হতে পারে।
জার্মানিতে কৃষিকাজ বা যেকোনো ধরনের কাজের জন্য যাওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো নিজে সরাসরি চাকরির সন্ধান করা এবং ভিসার জন্য আবেদন করা। জার্মানির Arbeitsagentur (ফেডারেল এমপ্লয়মেন্ট এজেন্সি) বা অন্যান্য সরকারি প্ল্যাটফর্মে কাজের খোঁজ করাই সবচেয়ে নিরাপদ।
৩. যাতায়াত খরচ
ঢাকা থেকে জার্মানির বিমান ভাড়া সিজনের ওপর নির্ভর করে অনেক ওঠানামা করে। সাধারণত ৫৫,০০০ থেকে ১ লাখ টাকা বা তারও বেশি হতে পারে।উপরের খরচগুলো যোগ করলে দেখা যায় যে, যদি আপনি কোনো এজেন্সির সাহায্য ছাড়া এবং সরাসরি একটি চাকরির অফার নিয়ে যান, তাহলে আপনার মোট খরচ হতে পারে ১ লাখ থেকে ২ লাখ টাকা। তবে, যদি আপনি এজেন্সির মাধ্যমে যান, তাহলে তাদের সার্ভিস চার্জ সহ মোট খরচ ৫ লাখ থেকে ১০ লাখ পর্যন্ত হতে পারে।
জার্মানিতে কৃষিকাজ বা যেকোনো ধরনের কাজের জন্য যাওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো নিজে সরাসরি চাকরির সন্ধান করা এবং ভিসার জন্য আবেদন করা। জার্মানির Arbeitsagentur (ফেডারেল এমপ্লয়মেন্ট এজেন্সি) বা অন্যান্য সরকারি প্ল্যাটফর্মে কাজের খোঁজ করাই সবচেয়ে নিরাপদ।
যে কোনো ধরনের দালাল বা প্রতারক চক্র থেকে দূরে থাকা অত্যন্ত জরুরি, কারণ তারা
প্রায়শই কাজের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে মানুষের কাছ থেকে বড় অঙ্কের টাকা
হাতিয়ে নেয়।
জার্মানি কী কী ভিসা পাওয়া যায়?
জার্মানি ইউরোপের সেনজেনভুক্ত একটি উন্নত দেশ যেখানে ভ্রমণ, পড়াশোনা, কাজ বা বসবাসের জন্য বিভিন্ন ধরনের ভিসা পাওয়া যায়। যা ভিসার ধরন নির্ভর করে মূলত আপনার উদ্দেশ্যের ওপর। নিম্নে জার্মানির কয়েকটি ভিসার নাম দেখুন-
📌আরো পড়ুন👉ইতালিতে বাংলাদেশিদের বেতন কত জেনে নিন
তবে, সাম্প্রতিক সময়ে জার্মানিতে কৃষি খাতে শ্রমিকের ঘাটতি পূরণের জন্য কৃষি কাজের ভিসা বাংলাদেশিদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করেছে। সব মিলিয়ে আমরা বলতে পারি, জার্মানি ভিসার বৈচিত্র্যের কারণে শিক্ষার্থী, শ্রমিক ও উদ্যোক্তাদের কাছে আকর্ষণীয় একটি গন্তব্য।
- পড়াশোনার জন্য স্টুডেন্ট ভিসা।
- কর্মসংস্থানের জন্য ওয়ার্ক ভিসা ও ব্লু কার্ড ভিসা।
- স্বল্প সময়ের ভ্রমণের জন্য ট্যুরিস্ট ভিসা।
- পরিবারকে সঙ্গে নেওয়ার জন্য ফ্যামিলি রিইউনিয়ন ভিসা।
- ব্যবসা করার জন্য বিজনেস ভিসা এবং
- বিশেষভাবে কৃষি ও মৌসুমি শ্রমের জন্য কৃষি কাজের ভিসা প্রদান করে থাকে জার্মানি।
তবে, সাম্প্রতিক সময়ে জার্মানিতে কৃষি খাতে শ্রমিকের ঘাটতি পূরণের জন্য কৃষি কাজের ভিসা বাংলাদেশিদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করেছে। সব মিলিয়ে আমরা বলতে পারি, জার্মানি ভিসার বৈচিত্র্যের কারণে শিক্ষার্থী, শ্রমিক ও উদ্যোক্তাদের কাছে আকর্ষণীয় একটি গন্তব্য।
বাংলাদেশিদের জন্য জার্মানির কৃষি কাজের ভিসা
বাংলাদেশিদের জন্য জার্মানির কৃষি কাজের ভিসা ২০২৫ একটি বড় ধরণের সুযোগ হয়ে এসেছে। কারণ, ইউরোপের কৃষি খাতে মৌসুমি শ্রমিকের ঘাটতি পূরণের জন্য জার্মানি বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ থেকে কর্মী নিচ্ছে। বিশেষ করে, যাদের উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই, তবুও শারীরিকভাবে সক্ষম এবং শ্রমে অভ্যস্ত, তাদের জন্য এটি একটি চমৎকার কর্মসংস্থানের পথ।
এই ভিসার আওতায় বাংলাদেশি শ্রমিকরা মাঠে ফসল রোপণ, ফসল তোলা, ফল-সবজি সংগ্রহ,
পশুপালন এবং গ্রীনহাউসের কাজ করতে পারেন। জার্মানিতে কর্মঘণ্টা সাধারণত
নির্দিষ্ট হয়ে থাকে এবং কৃষি শ্রমিকরা ইউরোপের অন্যান্য খাতের তুলনায় অনেক ভালো
বেতন পান।
পাশাপাশি নিয়োগকর্তা অনেক ক্ষেত্রে, থাকার জায়গা ও খাবারের ব্যবস্থা করে দেয়।
বর্তমানে বাংলাদেশি আবেদনকারীদের জন্য প্রক্রিয়াটি কিছুটা সহজ করা হয়েছে। তবে,
অবশ্যই বৈধ পাসপোর্ট, চাকরির চুক্তিপত্র, মেডিকেল সার্টিফিকেট ও পুলিশ
ক্লিয়ারেন্স থাকা বাধ্যতামূলক।
সঠিক কাগজপত্র এবং দূতাবাসের নিয়ম মেনে চললে বাংলাদেশিরা সহজেই জার্মানিতে
বৈধভাবে কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেতে পারেন।
📌আরো পড়ুন👉বাংলাদেশ থেকে রাশিয়া যাওয়ার উপায়
বিশেষ করে সেখানে কৃষি খাত, নার্সিং বা টেকনিক্যাল কাজে সরকারি চ্যানেলের মাধ্যমে লোক নেওয়া হয়। অন্যদিকে বেসরকারি প্রক্রিয়ায় ভিসা পাওয়া যায় সরাসরি নিয়োগকর্তার অফার লেটার, এজেন্সি বা নিজ উদ্যোগে আবেদন করে।
তবে, এক্ষেত্রে খরচ কিছুটা বেশি হলেও সুযোগ- সুবিধা বেশি পাওয়া যায়। কারণ, বিভিন্ন খাতে প্রচুর পরিমাণে শ্রমিকের চাহিদা থাকে। তবে, আবেদনকারিকে প্রতারণার ঝুঁকি এড়াতে সবসময় BMET অনুমোদিত এজেন্সি বা বিশ্বস্ত চ্যানেলের মাধ্যমে আবেদন করা উচিত।
সরকারি ও বেসরকারি যেকোনো প্রক্রিয়ায় ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে অবশ্যই বৈধ পাসপোর্ট, চাকরির অফার, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও দূতাবাসের নিয়ম মেনে চলা বাধ্যতামূলক।
এই খরচ শুধু ভিসা আবেদন ফি, এর বাইরে মেডিকেল রিপোর্ট, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট, ডকুমেন্ট অনুবাদ, কাগজপত্র নোটারি এবং ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্সের জন্য আলাদা খরচ যোগ হয়। জার্মানি কৃষি কাজের ভিসা তুলনামূলকভাবে কম খরচে পাওয়া যায়, যা সাধারণত ৬০ থেকে ৭৫ ইউরো ফি লাগে।
তবে, এখানে নিয়োগকর্তা অনেক সময় থাকার জায়গা ও খাবারের ব্যবস্থা করে দেয়, ফলে অতিরিক্ত খরচ কমে যায়। ব্লু কার্ড ভিসা বা দীর্ঘমেয়াদী কাজের ভিসার খরচ কিছুটা বেশি হতে পারে এবং কাগজপত্রের জন্য অতিরিক্ত খরচ ধরতে হয়।
মোটামুটি হিসাব করলে বাংলাদেশ থেকে জার্মানির যেকোনো কাজের ভিসার জন্য সাধারণত ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। তাই, আবেদন করার আগে দূতাবাসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে সর্বশেষ ফি জেনে নেওয়া জরুরি।
📌আরো পড়ুন👉লিবিয়া থেকে গেম দিয়ে কিভাবে ইতালি যাওয়া যায়?
বর্তমানে ঢাকা থেকে জার্মানির কোনো শহরে সরাসরি কোনো ফ্লাইট নেই। তাই আপনাকে সবসময়ই একটি ট্রানজিট বা বিরতি নিয়ে যেতে হবে। এই বিরতি সাধারণত মধ্যপ্রাচ্য বা ইউরোপের কোনো বড় এয়ারপোর্টে হয়। যেমন: দুবাই, দোহা, ইস্তাম্বুল, আবুধাবি ইত্যাদি।
বিরতিসহ মোট ভ্রমণের সময় নির্ভর করে কয়েকটি বিষয়ের ওপর:
উত্তর: না, এটি সহজ নয়। নির্দিষ্ট কৃষি ফার্ম থেকে চাকরির অফার পেলে ভিসা পাওয়া যায়।
Q2. বাংলাদেশ থেকে জার্মানি ভিসা কীভাবে আবেদন করব?
উত্তর: সরাসরি জার্মানির কোনো ফার্ম থেকে চাকরির অফার নিয়ে জার্মান দূতাবাসে আবেদন করতে হয়।
Q3. জার্মান ভাষা কি বাধ্যতামূলক?
উত্তর: মৌসুমি কাজের জন্য বাধ্যতামূলক নয়, তবে জানা থাকলে সুবিধা হয়।
Q4. জার্মানি ভিসা পেতে কত খরচ হয়?
উত্তর: নিজে আবেদন করলে ১-২ লাখ টাকা। এজেন্সির মাধ্যমে গেলে ৫-১০ লাখ টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে।
Q5. জার্মানি ভিসার মেয়াদ কত দিনের হয়?
উত্তর: মৌসুমি কাজের জন্য সাধারণত ৯০ দিনের হয়।
Q6. জার্মানিতে কীভাবে কাজ খুঁজব?
উত্তর: জার্মানির সরকারি জব পোর্টাল (Bundesagentur für Arbeit) বা অন্যান্য অনলাইন সাইটে সন্ধান করতে পারেন।
Q7. জার্মানি কৃষি কাজের ভিসা দিয়ে কি স্থায়ী হওয়া সম্ভব?
উত্তর: মৌসুমি কাজের ভিসা দিয়ে স্থায়ী হওয়া সম্ভব নয়।
Q8. জার্মানি কৃষি কাজের ভিসা আবেদনের জন্য বয়সসীমা কত?
উত্তর: সাধারণত ১৮ বছরের বেশি বয়স হতে হবে।
Q9. জার্মানি কৃষি কাজের মাসিক আয় কেমন হয়?
উত্তর: ন্যূনতম মজুরি প্রতি ঘণ্টায় প্রায় €12.41 ইউরো
জার্মানি ভিসা পাওয়ার উপায়
জার্মানি ভিসা পাওয়ার উপায় মূলত দুইভাবে হতে পারে যেমন- সরকারি ও বেসরকারি প্রক্রিয়ায়। সরকারি প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ সরকার ও জার্মান সরকারের যৌথ চুক্তির মাধ্যমে শ্রমিক বা শিক্ষার্থীদের পাঠানো হয়। এতে খরচ তুলনামূলকভাবে অনেক কম এবং ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।📌আরো পড়ুন👉বাংলাদেশ থেকে রাশিয়া যাওয়ার উপায়
বিশেষ করে সেখানে কৃষি খাত, নার্সিং বা টেকনিক্যাল কাজে সরকারি চ্যানেলের মাধ্যমে লোক নেওয়া হয়। অন্যদিকে বেসরকারি প্রক্রিয়ায় ভিসা পাওয়া যায় সরাসরি নিয়োগকর্তার অফার লেটার, এজেন্সি বা নিজ উদ্যোগে আবেদন করে।
তবে, এক্ষেত্রে খরচ কিছুটা বেশি হলেও সুযোগ- সুবিধা বেশি পাওয়া যায়। কারণ, বিভিন্ন খাতে প্রচুর পরিমাণে শ্রমিকের চাহিদা থাকে। তবে, আবেদনকারিকে প্রতারণার ঝুঁকি এড়াতে সবসময় BMET অনুমোদিত এজেন্সি বা বিশ্বস্ত চ্যানেলের মাধ্যমে আবেদন করা উচিত।
সরকারি ও বেসরকারি যেকোনো প্রক্রিয়ায় ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে অবশ্যই বৈধ পাসপোর্ট, চাকরির অফার, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও দূতাবাসের নিয়ম মেনে চলা বাধ্যতামূলক।
জার্মানি কোন কাজের ভিসা খরচ কত?
জার্মানিতে কাজের জন্য বিভিন্ন ধরনের ভিসা পাওয়া যায় এবং প্রতিটি ভিসার জন্য খরচ আলাদা হয়। তবে, সাধারণভাবে জার্মান ওয়ার্ক ভিসার আবেদন ফি প্রায় ৭৫ ইউরো, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৯,০০০ থেকে ১০,০০০ টাকা হয়ে যায়।এই খরচ শুধু ভিসা আবেদন ফি, এর বাইরে মেডিকেল রিপোর্ট, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট, ডকুমেন্ট অনুবাদ, কাগজপত্র নোটারি এবং ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্সের জন্য আলাদা খরচ যোগ হয়। জার্মানি কৃষি কাজের ভিসা তুলনামূলকভাবে কম খরচে পাওয়া যায়, যা সাধারণত ৬০ থেকে ৭৫ ইউরো ফি লাগে।
তবে, এখানে নিয়োগকর্তা অনেক সময় থাকার জায়গা ও খাবারের ব্যবস্থা করে দেয়, ফলে অতিরিক্ত খরচ কমে যায়। ব্লু কার্ড ভিসা বা দীর্ঘমেয়াদী কাজের ভিসার খরচ কিছুটা বেশি হতে পারে এবং কাগজপত্রের জন্য অতিরিক্ত খরচ ধরতে হয়।
মোটামুটি হিসাব করলে বাংলাদেশ থেকে জার্মানির যেকোনো কাজের ভিসার জন্য সাধারণত ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। তাই, আবেদন করার আগে দূতাবাসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে সর্বশেষ ফি জেনে নেওয়া জরুরি।
বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যেতে কত সময় লাগে
বাংলাদেশ থেকে জার্মানিতে যেতে ঠিক কত সময় লাগবে, সেটা নির্ভর করে আপনি কীভাবে যাচ্ছেন তার ওপর। তবে, বেশিরভাগ মানুষ যেহেতু বিমানেই যাতায়াত করে, তাই মূলত উড়োজাহাজের যাত্রার সময়টাই এখানে আলোচনা করা হলো।📌আরো পড়ুন👉লিবিয়া থেকে গেম দিয়ে কিভাবে ইতালি যাওয়া যায়?
বর্তমানে ঢাকা থেকে জার্মানির কোনো শহরে সরাসরি কোনো ফ্লাইট নেই। তাই আপনাকে সবসময়ই একটি ট্রানজিট বা বিরতি নিয়ে যেতে হবে। এই বিরতি সাধারণত মধ্যপ্রাচ্য বা ইউরোপের কোনো বড় এয়ারপোর্টে হয়। যেমন: দুবাই, দোহা, ইস্তাম্বুল, আবুধাবি ইত্যাদি।
বিরতিসহ মোট ভ্রমণের সময় নির্ভর করে কয়েকটি বিষয়ের ওপর:
- কোন এয়ারলাইনসে যাচ্ছেন: বিভিন্ন এয়ারলাইনসের রুটে বিরতির সময় ভিন্ন হয়।
- কোথায় ট্রানজিট নিচ্ছেন: ট্রানজিটের জন্য নির্বাচিত শহরের ওপরও সময় নির্ভর করে।
- কতক্ষণ বিরতি নিচ্ছেন: কিছু কিছু ফ্লাইটে ট্রানজিটের সময় ২-৩ ঘণ্টা হয়, আবার কিছু ফ্লাইটে এই সময় ৮-১০ ঘণ্টা বা তারও বেশি হতে পারে।
- এই সবকিছু মিলিয়ে, ঢাকা থেকে জার্মানি পৌঁছাতে সাধারণত ১৩ থেকে ২০ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
- ঢাকা থেকে ফ্রাঙ্কফুর্ট: এটি জার্মানির সবচেয়ে ব্যস্ত এবং জনপ্রিয় রুট। এই রুটে ফ্লাইটগুলো সাধারণত ১৫ থেকে ১৮ ঘণ্টা সময় নেয় (ট্রানজিটসহ)।
- ঢাকা থেকে বার্লিন: এই রুটে সময় কিছুটা কম লাগতে পারে। কিছু ফ্লাইটে ১৩-১৪ ঘণ্টাতেও পৌঁছানো সম্ভব।
বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQs)
Q1. জার্মানি কৃষি কাজের ভিসা কি সহজে মেলে?উত্তর: না, এটি সহজ নয়। নির্দিষ্ট কৃষি ফার্ম থেকে চাকরির অফার পেলে ভিসা পাওয়া যায়।
Q2. বাংলাদেশ থেকে জার্মানি ভিসা কীভাবে আবেদন করব?
উত্তর: সরাসরি জার্মানির কোনো ফার্ম থেকে চাকরির অফার নিয়ে জার্মান দূতাবাসে আবেদন করতে হয়।
Q3. জার্মান ভাষা কি বাধ্যতামূলক?
উত্তর: মৌসুমি কাজের জন্য বাধ্যতামূলক নয়, তবে জানা থাকলে সুবিধা হয়।
Q4. জার্মানি ভিসা পেতে কত খরচ হয়?
উত্তর: নিজে আবেদন করলে ১-২ লাখ টাকা। এজেন্সির মাধ্যমে গেলে ৫-১০ লাখ টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে।
Q5. জার্মানি ভিসার মেয়াদ কত দিনের হয়?
উত্তর: মৌসুমি কাজের জন্য সাধারণত ৯০ দিনের হয়।
Q6. জার্মানিতে কীভাবে কাজ খুঁজব?
উত্তর: জার্মানির সরকারি জব পোর্টাল (Bundesagentur für Arbeit) বা অন্যান্য অনলাইন সাইটে সন্ধান করতে পারেন।
Q7. জার্মানি কৃষি কাজের ভিসা দিয়ে কি স্থায়ী হওয়া সম্ভব?
উত্তর: মৌসুমি কাজের ভিসা দিয়ে স্থায়ী হওয়া সম্ভব নয়।
Q8. জার্মানি কৃষি কাজের ভিসা আবেদনের জন্য বয়সসীমা কত?
উত্তর: সাধারণত ১৮ বছরের বেশি বয়স হতে হবে।
Q9. জার্মানি কৃষি কাজের মাসিক আয় কেমন হয়?
উত্তর: ন্যূনতম মজুরি প্রতি ঘণ্টায় প্রায় €12.41 ইউরো
লেখকের শেষ মন্তব্য
জার্মানি বিভিন্ন ধরনের ভিসার মাধ্যমে বিদেশিদের জন্য সুযোগ উন্মুক্ত করেছে। পড়াশোনা, চাকরি, ভ্রমণ বা পরিবারকে নিয়ে বসবাস, সব ক্ষেত্রেই রয়েছে ভিসার আলাদা বিভাগ। বিশেষ করে ২০২৫ সালের কৃষি কাজের ভিসা অনেক বাংলাদেশির জন্য বড় সুযোগ হয়ে উঠতে পারে।
মৌসুমি কাজ হোক বা দীর্ঘমেয়াদি শ্রমের সুযোগ, এই ভিসার মাধ্যমে সহজে
জার্মানিতে প্রবেশ করা সম্ভব হয়। তাই, সঠিক যোগ্যতা অর্জন, প্রয়োজনীয়
কাগজপত্র সংগ্রহ এবং সঠিকভাবে আবেদন করলে জার্মানিতে বৈধভাবে কাজ ও আয় করার
স্বপ্ন পূরণ হতে পারে।
আড্ডাভিউ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url