মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে - মালয়েশিয়া কোন ভিসা ভালো 2025

বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার দ্বারা লাইসেন্স প্রাপ্ত আনুমানিক প্রায় ২ হাজার ৭০০ এজেন্সি রয়েছে। যারা প্রতিনিয়ত মালয়েশিয়া যাওয়ার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ভিসা তৈরি করে থাকে। তবে এই মালয়েশিয়া ভিসা তৈরি করতে তারা মোটা অংকের টাকা দাবি করে থাকে।
মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে
বর্তমানে মানুষ উন্নত চিকিৎসা, উচ্চশিক্ষা ও ভ্রমণ সহ ব্যবসায়িক কাজে মালয়েশিয়া পাড়ি জমাচ্ছে। অনেকেই আবার মালয়েশিয়া বসবাসের জন্য ফ্যামিলি ভিসার জন্য আবেদন করছে। তবে সব থেকে বেশি মানুষ কাজের উদ্দেশ্যে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় মালয়েশিয়া যাচ্ছে। মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে এবং মালয়েশিয়া কোন ভিসা ভালো জানতে শেষ অবদি পড়ুন।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ

মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে

বর্তমানে বিদেশগামী মানুষের মধ্যে মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। অন্যান্য দেশের মত মালয়েশিয়া যেতে ভিসা ও বিমান ভাড়া সহ বেশ কিছু জায়গায় লাখ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হয়। বিভিন্ন এজেন্সির সিন্ডিকেটের কারণে ভিসা তৈরীর খরচ দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে ২০২৫ সালে মালয়েশিয়া যাওয়ার খরচ পূর্বের তুলনায় কম।
কেননা মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুশন বিন ইসমাইল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সরকার অনুমোদিত বেশ কিছু বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান এতোদিন ধরে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে ভিসা তৈরি সংক্রান্ত বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রণ করতো। তবে বর্তমানে তাদের ছাড়া নিয়োগকর্তারাই সরাসরি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবে।

মালয়েশিয়ায় যেতে ২০২৫ সালে ঠিক কত টাকা লাগবে, তা কয়েকটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। তবে একটি সাধারণ ধারণা দেওয়া সম্ভব। সাধারণত, মালয়েশিয়ায় কাজের ভিসা নিয়ে যেতে সর্বনিম্ন ৩ লাখ ৫০ হাজার থেকে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে এই খরচ আরও বেশি হতে পারে।

মূল খরচের ভাগগুলো নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

ভিসা ও প্লেন টিকেট: মালয়েশিয়ায় কাজের ভিসা পেতে প্রায় ৬৫ থেকে ৭৫ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। এই খরচ সরকারি ফি, ভিসা প্রসেসিং এবং অন্যান্য প্রশাসনিক কাজের জন্য নেওয়া হয়। প্লেন টিকেটের দাম সাধারণত ২৫ থেকে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়। তবে টিকেটের দাম নির্ভর করে আপনি কোন এয়ারলাইন্সে যাচ্ছেন এবং কখন টিকেট কাটছেন তার ওপর।

রিক্রুটিং এজেন্সির খরচ: বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কর্মীরা রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে মালয়েশিয়া যান। এজেন্সিগুলো ভিসা প্রসেসিং, চাকরির ব্যবস্থা করা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজ করে থাকে। এসব কাজের জন্য তারা একটি বড় অঙ্কের সার্ভিস চার্জ নেয়।

সার্ভিস চার্জ: এজেন্সির ধরন এবং তাদের দেওয়া পরিষেবার ওপর নির্ভর করে এই চার্জ ২ লাখ ৫০ হাজার থেকে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা বা তারও বেশি হতে পারে। তাই এজেন্সি বেছে নেওয়ার আগে তাদের সম্পর্কে ভালোভাবে খোঁজখবর নেওয়া উচিত।

ভিসা ও টিকেটের পাশাপাশি আরও কিছু খরচ থাকতে পারে, যেমন:
  • মেডিকেল টেস্ট: মালয়েশিয়া যাওয়ার আগে একটি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো বাধ্যতামূলক। এর খরচ প্রায় ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা হতে পারে।
  • বিমা: কর্মক্ষেত্রের বিমা ও অন্যান্য বিমার জন্য প্রায় ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা লাগতে পারে।
  • অন্যান্য কাগজপত্র: পাসপোর্ট তৈরি এবং অন্যান্য জরুরি কাগজপত্র প্রস্তুত করতে কিছু বাড়তি খরচ হতে পারে।
সব মিলিয়ে, মালয়েশিয়া যেতে আপনার মোট খরচ ৩ লাখ ৫০ হাজার থেকে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার মধ্যে হবে। তবে, মনে রাখা ভালো যে এই খরচ কিছুটা কম বা বেশিও হতে পারে, যা নির্ভর করে আপনার ভিসা কোন প্রক্রিয়ায় হচ্ছে এবং কোন এজেন্সির মাধ্যমে যাচ্ছেন তার ওপর। তাই, যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করা জরুরি।

মালয়েশিয়া কোন ভিসা ভালো

বর্তমানে মালয়েশিয়া সরকার বিভিন্ন ধরনের ভিসার মাধ্যমে বিদেশি কর্মী নিয়োগ করে থাকে। এই ভিসাগুলোর মধ্যে কয়েকটি প্রধান ক্যাটাগরি রয়েছে। যেমন: কাজ করার জন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, পরিবার নিয়ে বসবাসের জন্য ফ্যামিলি ভিসা, এবং শুধুমাত্র ভ্রমণের উদ্দেশ্যে টুরিস্ট ভিসা।
বর্তমানে মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন ধরনের ভিসা চালু থাকায় নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন যে কোন ভিসাটি সবচেয়ে ভালো। যদি ভালো ভিসার একটি তালিকা তৈরি করা হয়, তাহলে এটি নির্ভর করবে আপনার উদ্দেশ্যের ওপর। তবে কাজের জন্য যারা যেতে চান, তাদের জন্য মালয়েশিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তালিকার শীর্ষে থাকবে।

বর্তমানে মালয়েশিয়ায় যেসব ভিসার জন্য আবেদন করা হয়, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবেদন আসে ওয়ার্ক ভিসার জন্য। যেহেতু মালয়েশিয়ায় পড়াশোনার মান ভালো, তাই অনেকেই স্টুডেন্ট ভিসায় সেখানে যান। এছাড়াও, মালয়েশিয়ায় প্রচুর পর্যটন কেন্দ্র থাকায় ভ্রমণের উদ্দেশ্যেও বিপুল সংখ্যক মানুষ টুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করেন।

মালয়েশিয়া কোন ভিসার সুবিধা বেশি

বর্তমানে মালয়েশিয়ার ভিসাগুলোর মধ্যে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা দেয়। এই ভিসায় একজন কর্মী মালয়েশিয়ায় দীর্ঘ সময় বৈধভাবে থাকতে পারেন। এছাড়াও, মালয়েশিয়া সরকার ওয়ার্ক পারমিট ভিসাধারীদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করে থাকে। অন্যদিকে, মালয়েশিয়া ফ্রি ভিসাতেও অনেক সুবিধা পাওয়া যায়।

মালয়েশিয়ার ফ্রি ভিসার একটি বড় সুবিধা হলো, এই ভিসাধারীরা নিজেদের পছন্দ মতো যেকোনো কোম্পানিতে চাকরি করতে পারেন এবং ইচ্ছামতো ওভারটাইম করে বেশি টাকা আয় করতে পারেন। এছাড়া মালয়েশিয়া একটি উন্নত দেশ হওয়ায় এখানে বসবাসের অনেক সুযোগ-সুবিধা আছে। এই কারণেই বর্তমানে অসংখ্য মানুষ ফ্যামিলি ভিসায় মালয়েশিয়ায় বসবাস করছেন।
মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন ধরনের ভিসা প্রচলিত আছে, এবং কোন ভিসার সুবিধা বেশি, তা নির্ভর করে আপনার ভ্রমণের উদ্দেশ্য ও ব্যক্তিগত পরিস্থিতির ওপর। তবে কিছু ভিসা আছে যেগুলো তুলনামূলকভাবে বেশি সুবিধা দিয়ে থাকে:

মালয়েশিয়া কাজের ভিসা

মালয়েশিয়ায় সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সুবিধাজনক ভিসা হলো কাজের ভিসা। এই ভিসার কিছু বিশেষ সুবিধা আছে:
  • এই ভিসায় যারা যান, তারা সাধারণত একটি নির্দিষ্ট চাকরির অফার নিয়েই যান। ফলে সেখানে পৌঁছে চাকরি হারানোর ভয় থাকে না।
  • ভালো মানের কোম্পানিগুলো সাধারণত যোগ্য কর্মীদের জন্য উচ্চ বেতন এবং স্বাস্থ্য বীমাসহ অন্যান্য সুবিধা দিয়ে থাকে।
  • এই ভিসার মাধ্যমে আপনি দীর্ঘ সময়ের জন্য মালয়েশিয়ায় বৈধভাবে থাকতে পারেন, যা ট্যুরিস্ট বা অন্যান্য স্বল্পমেয়াদী ভিসায় সম্ভব নয়।

মালয়েশিয়া স্পাউস ভিসা

যদি আপনার স্বামী বা স্ত্রী মালয়েশিয়ায় বৈধভাবে কর্মরত থাকেন বা সেদেশের নাগরিক হন, তাহলে আপনি স্পাউস ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। এর কিছু বিশেষ সুবিধা হলো:
  • এই ভিসার মাধ্যমে আপনি আপনার সঙ্গীর সঙ্গে মালয়েশিয়ায় থাকতে পারেন।
  • কিছু ক্ষেত্রে, এই ভিসাধারীরা মালয়েশিয়ায় কাজ করার অনুমতিও পান, যা তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে সাহায্য করে।

মালয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসা

যারা মালয়েশিয়ায় পড়াশোনা করতে যেতে চান, তাদের জন্য স্টুডেন্ট ভিসা সবচেয়ে ভালো। এর মাধ্যমে আপনি:
  • মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তুলনামূলক কম খরচে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রদান করে।
  • পড়াশোনার পাশাপাশি আপনি নির্দিষ্ট শর্তে পার্ট-টাইম কাজও করতে পারেন, যা আপনার খরচ কমাতে সাহায্য করবে।

মালয়েশিয়া ট্যুরিস্ট ভিসা

যদি আপনার উদ্দেশ্য শুধু ভ্রমণ হয়, তাহলে ট্যুরিস্ট ভিসাই আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো। এর সুবিধা হলো:
  • ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন তুলনামূলকভাবে সহজ এবং কম ঝামেলার।
  • এই ভিসার মাধ্যমে আপনি স্বল্প সময়ের জন্য মালয়েশিয়ার সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন।
আপনার যদি লক্ষ্য মালয়েশিয়ায় কাজ করা এবং দীর্ঘ সময় থাকা হয়, তাহলে কাজের ভিসা বা স্পাউস ভিসা সবচেয়ে সুবিধাজনক। আর যদি আপনার উদ্দেশ্য পড়াশোনা বা শুধু ভ্রমণ হয়, তাহলে যথাক্রমে স্টুডেন্ট ভিসা ও ট্যুরিস্ট ভিসাই আপনার জন্য সেরা। তাই, আপনার ব্যক্তিগত প্রয়োজন অনুযায়ী ভিসা বেছে নেওয়া উচিত।

সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার উপায়

বাংলাদেশ থেকে সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যাওয়া যায়। সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য প্রথমে বিএমইটি (BMET) অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করে একাউন্ট করে নিতে হবে। (BMET) অ্যাপে মালয়েশিয়া চাকরির সার্কুলার পাবলিশ করলে আবেদন করতে হবে।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে মালয়েশিয়া চাকরির সার্কুলার প্রকাশ করা হয়। এছাড়া সরকারিভাবে বোয়েসেলের মাধ্যমে মালয়েশিয়া যাওয়া যায়। এজন্য উপরে উল্লিখিত সরকারি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে নিয়মিত চোখ রাখতে হবে।

সরকারিভাবে কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে মালয়েশিয়া পাঠানো হয়। মালয়েশিয়া কাজের ভিসার জন্য আবেদনকারীদের মধ্যে থেকে যোগ্যদের বাছাই করে নেওয়া হয়। এভাবে বাংলাদেশ থেকে সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যাওয়া যায়।

মালয়েশিয়া কোন কাজের বেতন বেশি

সকল কাজের বেতন কাজের ক্যাটাগরির উপর নির্ভর করে। তাই মালয়েশিয়া কোন কাজের বেতন কত তা নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। তবে মালয়েশিয়াতে বিভিন্ন সরকারি চাকরির বেতন আনুমানিক ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। অপরদিকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরি করলে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা বেতন পাওয়া যায়।

মালয়েশিয়াতে শ্রমিকদের বেতন বেশ ভালো। একজন শ্রমিকের মাসিক বেতন সাধারণত সর্বনিম্ন ২৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এছাড়াও, সেখানে শ্রমিকদের ওভারটাইম করার ভালো সুযোগ আছে। ওভারটাইম করে একজন শ্রমিক মাসে সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা থেকে ৬০ হাজার টাকা বা তারও বেশি আয় করতে পারেন।

মালয়েশিয়া ভিসার দাম কত

ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার বিভিন্ন ধরনের ভিসা ক্যাটাগরি রয়েছে। এসব ভিসা ক্যাটাগরি অনুযায়ী মালয়েশিয়া ভিসার দাম কত হবে পরিবর্তিত হয়ে থাকে। মালয়েশিয়া যেতে আগ্রহীদের মালয়েশিয়া ভিসার দাম কত জেনে নিতে হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার খরচ প্রায় ৮০ হাজার টাকা। তবে অতিরিক্ত দুর্নীতির কারণে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত খরচে কেউ মালয়েশিয়া যাওয়ার সুযোগ পায় না।

মালয়েশিয়া কোন কাজের বেতন কত?

মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন কাজের বেতন নির্ভর করে অনেকগুলো বিষয়ের ওপর, যেমন—কাজের ধরন, আপনার দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং যে শহরে কাজ করছেন তার ওপর। তবে কিছু সাধারণ কাজের বেতনের একটা ধারণা নিচে দেওয়া হলো।

১। সাধারণ কাজের বেতন

কৃষি ও বাগান: কৃষিকাজে সাধারণত বেতন তুলনামূলক কম হয়। একজন নতুন কর্মী মাসিক ১৫০০ থেকে ২০০০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত পর্যন্ত আয় করতে পারেন। বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ৩৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ: ক্লিনিং বা পরিচ্ছন্নতার কাজে বেতন সাধারণত ১৮০০ থেকে ২২০০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত হয়। বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ৪২ হাজার থেকে ৫২ হাজার টাকা।

নির্মাণ শ্রমিক: নির্মাণ খাতে বেতন নির্ভর করে দক্ষতার ওপর। একজন নতুন শ্রমিকের বেতন ২০০০ থেকে ২৫০০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত হতে পারে। অর্থাৎ, বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ৪৭ হাজার থেকে ৫৯ হাজার টাকা। দক্ষ কর্মীদের বেতন এর চেয়েও বেশি হয়।

রেস্টুরেন্ট কর্মী: রেস্টুরেন্টে কাজ করলে বেতন সাধারণত ১৮০০ থেকে ২৪০০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত হতে পারে। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৪২ হাজার থেকে ৫৬ হাজার টাকা।

ফ্যাক্টরি বা কারখানার শ্রমিক: কারখানায় উৎপাদন বা প্যাকিংয়ের কাজ করলে বেতন ২০০০ থেকে ৩০০০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত পর্যন্ত হতে পারে। বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ৪৭ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা। ওভারটাইম করলে এই বেতন আরও বাড়ে।

২। দক্ষ কর্মীদের বেতন

ড্রাইভার: ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং অভিজ্ঞতা থাকলে বেতন অনেক ভালো। একজন দক্ষ ড্রাইভার মাসিক ২৫০০ থেকে ৪০০০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত বা তার বেশিও আয় করতে পারেন। বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ৫৯ হাজার থেকে ৯৪ হাজার টাকা।

টেকনিশিয়ান: এসি মেকানিক, ইলেকট্রিশিয়ান বা প্লাম্বারের মতো টেকনিক্যাল কাজে বেশ ভালো বেতন পাওয়া যায়। একজন অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ানের বেতন ৩০০০ থেকে ৫০০০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত পর্যন্ত হতে পারে। বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ৭০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা।

আইটি বা প্রফেশনাল কাজ: যারা আইটি, মার্কেটিং বা ম্যানেজমেন্টের মতো প্রফেশনাল কাজে দক্ষ, তাদের বেতন অনেক বেশি হয়। মাসিক ৫০০০ থেকে ১০,০০০ রিঙ্গিত বা তার চেয়েও বেশি বেতন পাওয়া সম্ভব।

মনে রাখবেন, এই বেতনগুলো একটি আনুমানিক হিসাব। আপনার দক্ষতা, কাজের সময় এবং ওভারটাইমের ওপর নির্ভর করে আসল বেতন কম বা বেশি হতে পারে। এছাড়াও, মালয়েশিয়ায় জীবনযাত্রার খরচ, বিশেষ করে বড় শহরগুলোতে, কিছুটা বেশি হয়। তাই খরচ ভালোভাবে হিসেব করে নেওয়া জরুরি।

মালয়েশিয়া যেতে কত বছর বয়স লাগে

সকল বয়সী মানুষের মালয়েশিয়া যাওয়ার অনুমতি রয়েছে। তবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ক্ষেত্রে বয়স সীমা নির্ধারণ করা আছে। কেননা মালয়েশিয়াতে শিশু শ্রম সম্পন্ন নিষিদ্ধ এবং ১৮ বছরের কম বয়সীদের কে শিশু বলা হয়। তাই মালয়েশিয়া যেতে হলে ভোটার আইডি কার্ড অথবা জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী সর্বনিম্ন বয়স ১৮ হতে হবে।

সাধারন প্রশ্ন ও উত্তর (FAQs)

Q1. মালয়েশিয়া যেতে মোট কত টাকা খরচ হয়?
মালয়েশিয়ায় কাজের ভিসা নিয়ে যেতে সাধারণত ৩.৫ লাখ থেকে ৪.৫ লাখ টাকা খরচ হতে পারে। এই খরচ ভিসা প্রসেসিং, এজেন্সি ফি, প্লেন টিকেট এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক ব্যয়ের ওপর নির্ভর করে।

Q2. ২০২৫ সালে মালয়েশিয়া কলিং ভিসার খরচ কেমন হতে পারে?
২০২৫ সালে কলিং ভিসার খরচ প্রায় ৩.৫০ লাখ থেকে ৪.৫০ লাখ টাকা হতে পারে। এর মধ্যে ভিসা ফি, এজেন্সি সার্ভিস চার্জ, প্লেন টিকেট এবং মেডিকেল খরচ অন্তর্ভুক্ত।

Q3. মালয়েশিয়ায় সবচেয়ে ভালো ভিসা কোনটি?
যদি আপনার উদ্দেশ্য কাজ করা হয়, তাহলে কাজের ভিসা সবচেয়ে ভালো। এটি বৈধভাবে কাজ করার এবং দীর্ঘ সময় থাকার সুযোগ দেয়। যদি পড়াশোনা করতে চান, তাহলে স্টুডেন্ট ভিসা এবং ভ্রমণের জন্য ট্যুরিস্ট ভিসা ভালো।

Q4. কলিং ভিসা কি নিরাপদ?
হ্যাঁ, কলিং ভিসা একটি বৈধ ও নিরাপদ উপায়। কারণ এই প্রক্রিয়ায় মালয়েশিয়ার কোম্পানি সরাসরি কর্মী নিয়োগের জন্য আবেদন করে। তবে, অবশ্যই সরকার অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে যেতে হবে।

Q5. কাজের ভিসার জন্য কী কী কাগজপত্র লাগে?
কাজের ভিসার জন্য সাধারণত একটি বৈধ পাসপোর্ট, পাসপোর্ট সাইজের ছবি, শিক্ষাগত ও কাজের অভিজ্ঞতার সনদ, মেডিকেল ফিটনেস সার্টিফিকেট এবং মালয়েশিয়ার কোম্পানির থেকে পাওয়া চাকরির প্রস্তাবপত্র (Job Offer Letter) প্রয়োজন হয়।

Q6. মালয়েশিয়া যেতে কি দালালের সাহায্য নেওয়া উচিত?
না, সরাসরি দালালের মাধ্যমে না গিয়ে সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত ও নির্ভরযোগ্য রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে যাওয়া উচিত। এতে করে প্রতারিত হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়।

Q7. মালয়েশিয়ায় কাজের ভিসা পেতে কত সময় লাগে?
কাজের ভিসা পেতে সাধারণত ২ থেকে ৪ মাস সময় লাগতে পারে। তবে এটি কোম্পানি ও এজেন্সির কার্যকারিতার ওপর নির্ভর করে কম-বেশি হতে পারে।

Q8. একজন নতুন কর্মী মালয়েশিয়ায় মাসিক কত টাকা আয় করতে পারেন?
একজন নতুন কর্মী কাজের ধরন অনুযায়ী মাসিক ১৫০০ থেকে ২৫০০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত আয় করতে পারেন। ওভারটাইম করলে এই আয় আরও বাড়তে পারে।

Q9. মালয়েশিয়ায় কোন কাজগুলোতে চাহিদা বেশি?
মালয়েশিয়ায় সাধারণত কৃষি, নির্মাণ, উৎপাদন, রেস্টুরেন্ট এবং সার্ভিস সেক্টরের কাজগুলোতে বাংলাদেশি কর্মীদের চাহিদা বেশি।

Q10. স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে কি মালয়েশিয়ায় কাজ করা যায়?
হ্যাঁ, স্টুডেন্ট ভিসায় শিক্ষার্থীরা পার্ট-টাইম কাজ করার অনুমতি পান। তবে এর জন্য কিছু নির্দিষ্ট শর্ত মেনে চলতে হয়।

লেখকের শেষ মতামত

মালয়েশিয়া একটি উন্নত দেশ হওয়ায় এখানে কাজের জন্য প্রচুর ভিসার আবেদন করা হয়। যেহেতু মালয়েশিয়ার ভিসার চাহিদা অনেক বেশি, তাই এই খাতে দুর্নীতির ঘটনাও বেশি ঘটে। এ কারণে মালয়েশিয়ার ভিসার জন্য আবেদন করার আগে অবশ্যই অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষের অভিজ্ঞতা না থাকায় প্রায় সকলেই বিভিন্ন দালাল বা এজেন্সির দ্বারা মালয়েশিয়া যাওয়ার সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করে। এর সুযোগ নিয়ে অনেক অসাধু দালাল মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। তাই মালয়েশিয়া যাওয়ার ক্ষেত্রে এজেন্সি বা দালাল থেকে সতর্ক থাকতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আড্ডাভিউ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url