ইতালিতে বাংলাদেশিদের বেতন কত - ইতালিতে সর্বনিম্ন বেতন কত (আপডেট তথ্য)

আমাদের বাংলাদেশ থেকে অনেকে ইতালিতে কাজের জন্য যেতে চায়। তবে বেশিরভাগ আগ্রহীরা ইতালিতে বেতন কত জানে না। বিদেশে যেতে আগ্রহীদের কাছে ইতালি স্বপ্নের একটি দেশ। পশ্চিম ইউরোপের সেনজেনভুক্ত এই দেশটিতে যেতে পারলে বেশি বেতনে কাজ করা যায়।  ইতালিতে বাংলাদেশিদের বেতন কত জানলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।
ইতালিতে বাংলাদেশিদের বেতন কত
ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে আগ্রহীদের বিভিন্ন ধরনের কাজের বেতন সম্পর্কে ধারণা রাখতে হয়। কাজের ভিসা নিয়ে দেশটিতে যেতে আগ্রহীদের ইতালিতে বেতন কত হয় জানতে হবে। এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়লে জানতে পারবেন কাজের ক্যাটাগরি অনুযায়ী ইতালিতে বেতন কত হয়।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ

ইতালিতে বাংলাদেশিদের বেতন কত

ইতালিতে বাংলাদেশি কর্মীদের বেতন বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে, যেমন: কাজের ধরন, শ্রমিকের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং যে শহরে কাজ করছেন তার উপর। তবে, একজন বাংলাদেশি শ্রমিক ইতালিতে কোন ধরনের কাজ করছেন, তার ওপর ভিত্তি করে বেতনের পরিমাণ ভিন্ন হয়। সাধারণত, যেসব খাতে বাংলাদেশিরা বেশি কাজ করেন, সেগুলোর বেতন কাঠামো নিচে তুলে ধরা হলো:
১। কৃষি কাজ: ইতালির কৃষি খাতে অনেক বাংলাদেশি শ্রমিক কাজ করেন। একজন নতুন কৃষি শ্রমিকের মাসিক বেতন ৭০০ থেকে ১০০০ ইউরো পর্যন্ত হতে পারে। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৮৮,২০০ থেকে ১,২৬,০০০ টাকা।

২। নির্মাণ কাজ: নির্মাণ শিল্পে নতুন শ্রমিকদের মাসিক বেতন সাধারণত ১২০০ থেকে ২০০০ ইউরো হয়ে থাকে। দক্ষ শ্রমিকদের বেতন এর চেয়েও বেশি হতে পারে। বাংলাদেশি টাকায় এটি প্রায় ১,৫১,০০০ থেকে ২,৫২,০০০ টাকা পর্যন্ত।

৩। ডেলিভারি সার্ভিস ও রেস্টুরেন্ট: এই খাতে নতুন কর্মীদের বেতন ১১০০ থেকে ১৫০০ ইউরো পর্যন্ত হয়। যারা দক্ষ শেফ বা অভিজ্ঞ কর্মী, তাদের মাসিক আয় ১৫০০ ইউরোর উপরেও হতে পারে। বাংলাদেশি টাকায় এটি ১,৩৮,০০০ থেকে ১,৮৯,০০০ টাকা।

৪। পরিচ্ছন্নতার কাজ: এই কাজে সাধারণত নতুন শ্রমিকদের প্রতি মাসে বেতন প্রায় ১৩৮,৬০০ থেকে ১,৮৯,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখতে হবে:
  • ওভারটাইম: ইতালিতে অনেক কাজেই ওভারটাইম করার সুযোগ থাকে। ওভারটাইম করলে বেসিক বেতনের বাইরে অতিরিক্ত আয়ের সুযোগ তৈরি হয়, যা মোট বেতন অনেক বাড়িয়ে দেয়।
  • কাজের চুক্তি: বেতন মূলত নির্ভর করে আপনার কাজের চুক্তির উপর। যদি আপনি একটি ভালো কোম্পানির সাথে বৈধ চুক্তি করে কাজ পান, তাহলে আপনার বেতন এবং অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত থাকে।
  • শহর ও খরচ: ইতালির বড় শহরগুলোতে যেমন রোম, মিলান বা ভেনিসে কাজের বেতন বেশি হলেও জীবনযাত্রার খরচও অনেক বেশি। তুলনামূলকভাবে ছোট শহরগুলোতে আয় কম হলেও খরচও কম থাকে।
কাজের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা বাড়লে বেতনও বাড়ে। একজন দক্ষ ও পুরোনো কর্মী মাসিক ১.৫ লক্ষ থেকে ২.৫ লক্ষ টাকা বা তার বেশিও উপার্জন করতে পারেন। বিশেষ করে যারা ড্রাইভিং, কনস্ট্রাকশন বা কারখানার মতো কাজে দক্ষ, তাদের আয়ের সুযোগ অনেক বেশি।

এছাড়াও, ওভারটাইম করলে বা ভালো কোম্পানিতে চাকরি পেলে আয় আরও বাড়ে। তবে এটাও মনে রাখতে হবে যে, ইতালিতে জীবনযাত্রার খরচ, বিশেষ করে বড় শহরগুলোতে, বেশ বেশি। তাই বেতন যাই হোক না কেন, খরচের বিষয়টি মাথায় রেখে পরিকল্পনা করা উচিত।

সব মিলিয়ে, একজন বাংলাদেশি শ্রমিক ইতালিতে সাধারণত মাসিক ১,০০,০০০ থেকে ২,৫০,০০০ টাকার মধ্যে আয় করতে পারেন। তবে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বাড়ার সাথে সাথে এই আয় আরও বৃদ্ধি পায়।

ইতালিতে সর্বনিম্ন বেতন কত

বাংলাদেশ থেকে অনেকেই ইতালিতে কাজের জন্য গিয়েছেন, দীর্ঘদিন থেকে তারা কাজও করছেন। আবার অনেকে নতুন করে ইতালিতে কাদের জন্য যেতে চাচ্ছেন ওই জন্য প্রতিনিয়ত জিজ্ঞাসা করেন ইতালিতে সর্বনিম্ন বেতন কত। ইতালিতে বেতন নির্ধারণ করে কাজের উপর ভিত্তি করে।
ভিন্ন ভিন্ন কাজ অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন বেতন দেওয়া হয়। তাছাড়া কোম্পানি, রেস্টুরেন্ট, হোটেল, ফুড ডেলিভারি, কনস্ট্রাকশন কাজের বেতন ভিন্ন ভিন্ন। আপনি যে কাজ করবেন ওই কাজের নির্দিষ্ট পরিমাণ বেতন পাবেন। পাশাপাশি ওভারটাইম যদি করেন সে ক্ষেত্রে ওভারটাইমের অতিরিক্ত বেতন পাবেন।

অনেকে রয়েছেন যারা হোটেলে শেফ হিসেবে কাজ করেন। বিভিন্ন ধরনের খাবার রান্না করাই তাদের মূল কাজ। তারা সাধারণ ব্যক্তিদের চাইতে অনেক বেশি টাকা আয় করেন। ইতালিতে সরকারিভাবে কোন নির্ধারিত বেতন নেই। তবে বিভিন্ন কোম্পানিগুলো তাদের কাজের ধরন অনুযায়ী শ্রমিকদের প্রতি ঘন্টায় ৭-৯ ইউরো পর্যন্ত বেতন দেয়। যা বাংলাদেশী টাকায় ৮৮২-১১৩৪ টাকা মত।

কাজের দক্ষতা অনুযায়ী ইতালিতে সর্বনিম্ন বেতন ১৩০,০০০-২৫০,০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে আপনি কাজের দক্ষতা অনুযায়ী এর চাইতে কম অথবা বেশি বেতন পাবেন। প্রিয় পাঠক আশা করি ইতালিতে সর্বনিম্ন বেতন কত সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

ইতালিতে সর্বোচ্চ বেতন কত

ইতালিতে অনেকগুলো পেশা রয়েছে যেগুলোতে সর্বোচ্চ বেতন পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। উদাহরণস্বরূপ ইতালি সর্বোচ্চ বেতন কত ইউরো নিচে তার কিছু ডকুমেন্ট উল্লেখ করা হলঃ
  • কৃষি কাজের সর্বোচ্চ বেতন প্রায় 800-2100 ইউরো পর্যন্ত হতে পারে।
  • জাহাজ কর্মীর সর্বোচ্চ বেতন প্রায় 1500-2500 ইউরো পর্যন্ত হতে পারে।
  • সাধারণ শ্রমিকের সর্বোচ্চ বেতন প্রায় 1000-1500 ইউরো পর্যন্ত হতে পারে।
  • ড্রাইভিং এর সর্বোচ্চ বেতন প্রায় 1000-3000 ইউরো পর্যন্ত হতে পারে।
  • রেস্টুরেন্ট কর্মীর সর্বোচ্চ বেতন প্রায় 800-2500 ইউরো পর্যন্ত হতে পারে।
  • মার্কেটিং কর্মীর সর্বোচ্চ বেতন প্রায় 2000-2500 ইউরো পর্যন্ত হতে পারে।
  • ইলেকট্রনিক্স কর্মীর সর্বোচ্চ বেতন প্রায় 2000-4000 ইউরো পর্যন্ত হতে পারে।
  • কনস্ট্রাকশন কর্মীর সর্বোচ্চ বেতন প্রায় 1200-3000 ইউরো পর্যন্ত হতে পারে।
প্রিয় পাঠকগণ আপনি যদি কাজের দক্ষতা নিয়ে ইতালিতে যেতে পারেন। তাহলে আপনার বিভিন্ন কাজের উপর সর্বোচ্চ বেতন নির্ধারণ করা হতে পারে।

ইতালিতে কোন কাজের বেতন কত

অনেকেই বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে কাজ করার স্বপ্ন দেখেন। তবে, প্রচুর টাকা খরচ করে সেখানে গিয়ে যদি ভালো বেতন না পাওয়া যায়, তাহলে লাভের বদলে ক্ষতির মুখে পড়ার ঝুঁকি থাকে। তাই, ইতালিতে যাওয়ার আগে কাজের ধরন ও বেতন সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

তাই ইতালি যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই ইতালিতে সর্বনিম্ন বেতন কত ও ইতালিতে কোন কাজের বেতন কত তা জানা প্রয়োজন। ইতালিতে বিভিন্ন ধরনের কাজের জন্য বাংলাদেশীরা যাই। ভিন্ন ভিন্ন কাজ অনুযায়ী ইতালির বেতন ভিন্ন রকম। বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে শ্রমিকেরা যে কাজের জন্য যায় তা হলঃ
  • কৃষিকাজ
  • কনস্ট্রাকশন কাজ
  • পরিছন্নতার কাজ
  • রেস্টুরেন্ট ও হোটেলের কাজ
  • ফ্যাক্টরির কাজ
  • ডেলিভারি সার্ভিস
  • ড্রাইভিং এর কাজ
  • জাহাজ নির্মাণের কাজ
  • গার্মেন্টস এর কাজ
এছাড়াও ইতালিতে আরও অনেক ধরনের কাজ রয়েছে এবং প্রতিটি কাজের বেতন ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। সাধারণত, একজন শ্রমিকের দক্ষতা (দক্ষ বা অদক্ষ), অভিজ্ঞতা (নতুন বা পুরাতন) এবং কাজের ধরন অনুযায়ী বেতন নির্ধারিত হয়। নিচে কোন কাজের বেতন কত নতুন ও পুরাতন শ্রমিকের বেতন কেমন তার একটি তালিকা দেয়া হলোঃ

১। কৃষিকাজঃ ইতালিতে কৃষি কাজের নতুন শ্রমিকের বেতন ৬ ইউরো দক্ষ শ্রমিকের বেতন ৯ ইউরো। মাসিক বেতন ১০০০-১৫০০ ইউরো যা বাংলাদেশী টাকায় ১ লক্ষ ২৬ হাজার টাকা থেকে, ১,৮৯,০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত।

২। কনস্ট্রাকশন কাজঃ ইতালিতে নির্মাণ বা কনস্ট্রাকশন কাজের একজন নতুন শ্রমিকের প্রতি ঘণ্টার বেতন সাধারণত ৮ থেকে ১২ ইউরো পর্যন্ত হয়ে থাকে। সে অনুযায়ী, তাদের মাসিক আয় দাঁড়ায় প্রায় ১২০০ থেকে ২০০০ ইউরো, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১,৫১,০০০ থেকে ২,৫২,০০০ টাকা।

৩। পরিছন্নতার কাজঃ পরিচ্ছন্নতার কাজে একজন নতুন শ্রমিকের প্রতি ঘণ্টার বেতন সাধারণত ৭ থেকে ১০ ইউরো হয়ে থাকে। এর ফলে, তাদের মাসিক আয় বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১,৩৮,৬০০ থেকে ১,৮৯,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

৪। রেস্টুরেন্ট ও হোটেলের কাজঃ হোটেল ও রেস্টুরেন্ট এর কাজেও নতুন ও দক্ষ শ্রমিকের বেতনের কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। নতুন শ্রমিকের বেতন ৭ ইউরো ও পুরাতন অথবা দক্ষ শ্রমিকের বেতন ১০ ইউরো। প্রতি মাসের বেতন ১২০০-১৮০০ ইউরো যা বাংলাদেশী টাকায় ১৫১,২০০-২২৬,৮০০ টাকা পর্যন্ত

৫। ফ্যাক্টরির কাজঃ কারখানায় কাজের ক্ষেত্রে নতুন শ্রমিকদের প্রতি ঘণ্টার বেতন সাধারণত ৭ ইউরো হয়ে থাকে, আর দক্ষ শ্রমিকদের বেতন ১০ ইউরো পর্যন্ত হতে পারে। সব মিলিয়ে, মাসিক বেতন ১২০০ থেকে ১৬০০ ইউরো পর্যন্ত হতে পারে। বাংলাদেশি টাকায় এই বেতন প্রায় ১,৫১,০০০ থেকে ২,০১,০০০ টাকা।

৬। ডেলিভারি সার্ভিসঃ ডেলিভারি সার্ভিসের কাজে নতুন এবং পুরোনো কর্মীদের বেতনে কিছুটা পার্থক্য থাকে। সাধারণত, নতুন কর্মীদের প্রতি ঘণ্টার বেতন ৬ ইউরো থেকে শুরু হয়, যেখানে পুরোনো বা অভিজ্ঞ কর্মীরা প্রতি ঘণ্টায় ৯ ইউরো পর্যন্ত পেতে পারেন। সব মিলিয়ে, মাসিক আয় ১১০০ থেকে ১৫০০ ইউরো পর্যন্ত হতে পারে, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১,৩৮,০০০ থেকে ১,৮৯,০০০ টাকার সমান।

৭। ড্রাইভিং এর কাজঃ ড্রাইভিং পেশায় বেতন সাধারণত কোম্পানিভেদে ভিন্ন হয়। একজন নতুন ড্রাইভারের জন্য প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৮ ইউরো বেতন হতে পারে, যেখানে একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ ড্রাইভারের বেতন ঘণ্টায় ১২ ইউরো পর্যন্ত হয়ে থাকে। সব মিলিয়ে, মাসিক আয় হতে পারে ১৫০০ থেকে ২২০০ ইউরো, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১,৮৯,০০০ থেকে ২,৭৭,০০০ টাকার সমান।

৮। জাহাজ নির্মাণের কাজঃ জাহাজ নির্মাণের কাজ গুলোর বেতন নতুন শ্রমিকের কম ও পুরাতন শ্রমিক অথবা দক্ষ শ্রমিকের বেশি। জাহাজ নির্মাণের কাজে অন্যান্য কাজের চাইতে কিছুটা বেতন বেশি নতুন শ্রমিকের বেতন ৯ ইউরো, দক্ষ শ্রমিকের বেতন ১৩ ইউরো পর্যন্ত। মাসিক বেতন ১৬০০-২৫০০ ইউরো পর্যন্ত যা বাংলাদেশী টাকায় ২০১,০০০-৩১৫,০০০ পর্যন্ত।

৯। গার্মেন্টস এর কাজঃ অন্যান্য কাজের চাইতে গার্মেন্টস কাজের বেতন কিছুটা কম। তবে কোম্পানি অনুযায়ী গার্মেন্টস কাজের বেতন নির্ধারিত হয়। এখানেও নতুন শ্রমিকের বেতন কম ও দক্ষ শ্রমিকের বেতন বেশি নতুন শ্রমিকের বেতন ৭ ইউরো, পুরাতন শ্রমিকের বেতন ৯ ইউরো। মাসিক বেতন ১১০০-১৫০০ ইউরো পর্যন্ত। যা বাংলাদেশী টাকায় ১৩৮,০০০-১৮৯,০০০ টাকা পর্যন্ত।

উপরে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট সময় ও মাসের বেতনের তালিকা দেওয়া হয়েছে। আপনি যদি ওভার টাইম করতে পারেন সেক্ষেত্রে এর চাইতেও বেশি আয় করতে পারবেন। অথবা নতুন শ্রমিক হিসেবে কোম্পানির পার্থক্য অনুযায়ী এর চাইতে কম টাকাও আয় করতে পারেন। এটি একান্তই নির্ভর করে কোম্পানির ওপর।

ইতালিতে রেস্টুরেন্ট বেতন কত

ইতালিতে অনেকের রেস্টুরেন্ট কাজের জন্য যেতে চান। তাই প্রতিনিয়ত তারা ইতালিতে কোন কাজের বেতন কত ও ইতালিতে রেস্টুরেন্ট বেতন কত তা জানতে চান। ইতালিতে রেস্টুরেন্টের বেতন নতুন শ্রমিকের কিছুটা কম। পুরাতন শ্রমিকের ও দক্ষ শ্রমিকের বেতন কিছুটা বেশি। 

তাছাড়া এর মধ্যে সাধারণ বয় ও হোটেল শেফ এর বেতনের কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। মূলত, রেস্টুরেন্টে নতুন ওয়েটারদের বেতন ১,২০,০০০ থেকে ১,৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। অন্যদিকে, দক্ষ এবং পুরোনো শেফ বা বাবুর্চিদের বেতন ২,০০,০০০ থেকে ২,৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

ইতালিতে শ্রমিকদের বেতন কত

ইতালিতে যদি আপনি কাজের উদ্দেশ্যে জেনে থাকেন এবং আপনি কৃষিকাজ থেকে শুরু করে রেস্টুরেন্ট ড্রাইভিং বা যে কোন শ্রমিকের কাজই করুন না কেন আপনি বিভিন্ন কাজের সুযোগ পেয়ে যাবেন ইতালিতে তবে বাংলাদেশের বিশ্বের অন্যান্য মানুষের আগ্রহ অনেকটাই বেশি লক্ষ্য করা যায় ইতালিতে যাওয়ার জন্য।
এমন কেউ অন্যান্য দেশের তুলনায় এ দেশের ন্যূনতম মাসিক বেতন অনেক বেশি নির্ধারণ করা হয় বর্তমানে বাংলাদেশের ১১৯ টাকা ৫০ পয়সার পরিবর্তে ইতালির এক ইউরো পাওয়া যায়। এই হিসেবে একজন রেস্টুরেন্ট কর্মী প্রতিমাসে ইতালির অনুযায়ী ৮০০ থেকে ১০০০ ইউরো প্রতি মাসে বেতন পেয়ে থাকেন।

যা বাংলাদেশি টাকায় ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা তবে তার কাজের ধরনের ওপর অনেক সময় এই বেতন ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে যায়। ইটালিতে শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন অনেক বেশি কারণ তাদের টাকার মান অনেক বেশি।

কৃষি কাজের বেতন সাধারণত সর্বনিম্ন ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই বেতনের পরিমাণ কাজের ধরন এবং অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে ভিন্ন হতে পারে।

কনস্ট্রাকশন শ্রমিক হিসেবে ইতালিতে গেলে আপনার সর্বনিম্ন মাসিক বেতন সাধারণত ৮০ হাজার থেকে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এই বেতন আপনার কাজের অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে কম-বেশি হতে পারে।

একজন রেস্টুরেন্ট কর্মী সর্বনিম্ন বেতন ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার। ফুড প্যাকেজিং কাজের জন্য নিয়োজিত ব্যক্তিদের সর্বনিম্ন বেতন ৭০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা। ড্রাইভিং কর্মীর প্রচুর চাহিদা এক্ষেত্রে একজন ড্রাইভার এর বেতন ১ লক্ষ থেকে এক লক্ষ ত্রিশ হাজার টাকার মধ্যে হয় বেতন।

ইতালিতে কৃষি কাজের বেতন কত

অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকে ইতালিতে কোন কাজের বেতন কত এবং বিশেষ করে কৃষি কাজের বেতন কেমন। আপনারা যারা ইতালিতে কৃষি কাজ করতে যেতে আগ্রহী, তাদের জন্য ইতালিতে কৃষি কাজের সর্বনিম্ন বেতন সম্পর্কে জেনে নেওয়া খুবই জরুরি। 

এই তথ্যটি আপনাকে ইতালিতে কাজের সুযোগ এবং আর্থিক দিক সম্পর্কে সঠিক ধারণা দেবে। এতে আপনি প্রতি মাসে কত টাকা আয় করতে পারবেন সে সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাবেন। ইতালিতে দক্ষ শ্রমিক এর চাইতে নতুন শ্রমিকের বেতন কম হয়। তবে আপনিও যখন দক্ষ শ্রমিককে পরিণত হবেন তখন আপনারও বেতন সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাবে। 

এছাড়া নতুন ও দক্ষ উভয় শ্রমিকেরাই ওভারটাইম কাজের সুযোগ পায়। আপনি যদি ওভারটাইম কাজ করেন সেক্ষেত্রে বেতনের পরিমাণ বেশি পাবেন। 

ইতালিতে কৃষি খাতে নতুন শ্রমিকদের মাসিক বেতন সাধারণত ৭০০ থেকে ১০০০ ইউরো হয়ে থাকে, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৮৮,২০০ থেকে ১,২৬,০০০ টাকার সমান। যারা এই কাজে পুরোনো এবং দক্ষ, তাদের বেতন আরও বেশি—মাসিক ১২০০ থেকে ১৫০০ ইউরো পর্যন্ত হতে পারে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১,৫১,০০০ থেকে ১,৮৯,০০০ টাকা। এছাড়া, ওভারটাইম করলে অতিরিক্ত আয়েরও সুযোগ রয়েছে।

ইতালি কোন কাজের চাহিদা বেশি

অনেকেই জানতে চান যে ইতালিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি এবং কোন কাজের বেতন কেমন। আপনাদের মধ্যে যারা ইতালিতে কাজ করতে যেতে ইচ্ছুক, তাদের জন্য এই তথ্যগুলো জানা খুবই জরুরি। ইতালিতে এমন বেশ কিছু কাজের ক্ষেত্র আছে যেখানে বাংলাদেশের শ্রমিকেরা কাজ করে ভালো পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছেন।

এসব কাজ সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকলে আপনারা সহজেই নিজেদের জন্য উপযুক্ত পেশা বেছে নিতে পারবেন। ইতালিতে বিভিন্ন সেক্টর রয়েছে যেগুলোতে দক্ষ ও অদক্ষ উভয় শ্রমিকের ওই প্রয়োজন। ইতালিতে বেশকিছু সেক্টরে কাজের চাহিদা রয়েছে তার একটি তালিকা নিচে দেওয়া হলঃ
  • কৃষিকাজ
  • হোটেল ও রেস্টুরেন্ট এর কাজ
  • হাউজ কিপিং
  • রাজমিস্ত্রি
  • প্লাম্বার
  • ইলেকট্রিসিয়ান
  • কেয়ার গিভার
  • হোম হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট
  • নার্স
  • ক্লিনার
  • ফ্যাক্টরি ও ম্যানুফ্যাকচারিং
  • প্যাকেজিং
  • প্রোডাকশন
  • ফুড ডেলিভারি
  • জাহাজ নির্মাণ শিল্প
  • ড্রাইভিং
উপরে দেওয়া প্রত্যেকটি কাজের ওই ইতালিতে প্রচুর পরিমাণে চাহিদা রয়েছে। তবে কাজের ধরন অনুযায়ী বেতনের কিছুটা কম বেশি রয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন কাজের বেতন ভিন্ন রকম। তাই বাংলাদেশিরা ভিন্ন ভিন্ন কাজের ট্রেনিং নিয়ে ইতালিতে গিয়ে কাজ করে। আপনিও চাইলে উপরে দেওয়া কাজগুলোর যেকোনো একটি পছন্দ অনুযায়ী ট্রেনিং নিয়ে ইতালিতে গিয়ে কাজ করতে পারেন।

ইতালির সবচেয়ে জনপ্রিয় কাজ কি

ইতালিতে কোন কাজগুলো সবচেয়ে জনপ্রিয়, এই প্রশ্নটি আপনাদের অনেকের মনেই আসে। কিন্তু অনেকেই জানেন না যে সেখানে কোন কাজগুলোর চাহিদা বেশি এবং সেগুলো করার জন্য কী কী দক্ষতার প্রয়োজন হয়। ইতালিতে এমন বেশ কিছু জনপ্রিয় কাজ রয়েছে, যেগুলো করতে পারলে ভালো আয়ের সুযোগ আছে। তাই এই কাজগুলো সম্পর্কে ধারণা থাকা আপনার জন্য খুবই জরুরি।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষ ইতালিতে যাওয়ার জন্য অনেক চেষ্টা করে থাকে। ইতালিতে কাজের সুযোগের অভাব নেই, তবে সেখানে দক্ষ শ্রমিকের অনেক ঘাটতি রয়েছে। এই কারণে ইতালি প্রায়শই বিদেশি কর্মী নিয়োগ দিয়ে থাকে। আপনি যদি ইতালিতে যাওয়ার কথা ভাবেন, তাহলে এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেন।

তাহলে প্রথমে আপনার যেসব কাজে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। কেননা ইতালিতে কাজ করার জন্য দক্ষতা প্রয়োজন, বিশেষ করে আপনি যদি ইতালি ভাষা না জানেন তাহলে আপনি ইতালিতে কাজ পাবেন না। এজন্য ইতালিতে দক্ষতার চাহিদা অনেক বেশি।

কেননা ইতালিতে শুধুমাত্র দক্ষ শ্রমিককে নিয়োগ দেওয়া হয়। আপনি যদি ইতালি ভাষা জানেন তাহলে আপনার কাজ পাওয়া অনেক সহজ হয়ে যাবে। আর আপনি যদি ইতালি ভাষা কথা বলতে না পারেন তাহলে কাজ পাওয়া অনেক কঠিন হয়ে পড়বে।

এজন্য অবশ্যই ইতালিতে যাওয়ার আগে ইতালি ভাষা প্রশিক্ষণ নিয়ে যাবেন। আপনি যদি ইতালিতে শ্রমিক হিসেবে যান তাহলে অবশ্যই ৫ থেকে ৬ ধরনের কাজের প্রশিক্ষণ নিয়ে যাবেন। ইতালির মানুষ সব সময় একজন দক্ষ শ্রমিককে নিয়োগ দিয়ে থাকে। ইতালির সবচেয়ে জনপ্রিয় কাজ হলোঃ
  • ইঞ্জিনিয়ার
  • মেকানিক
  • অফিসের কাজ
  • ফ্যাক্টরির কাজ
  • নার্সিং
  • আইনজীবী

লেখকের শেষ মন্তব্য

ইতালিতে বাংলাদেশিদের বেতন নিয়ে চূড়ান্ত কিছু বলা বেশ কঠিন, কারণ এটি নির্ভর করে অনেকগুলো বিষয়ের ওপর। তবে একটি সাধারণ ধারণা দেওয়া সম্ভব। সাধারণত, একজন নতুন বাংলাদেশি কর্মী যদি ইতালিতে যান, তার মাসিক আয় ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এই বেতন সাধারণত কৃষি, নির্মাণ বা ডেলিভারি সার্ভিসের মতো প্রাথমিক কাজগুলোতে দেখা যায়।

তবে, কাজের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা বাড়লে বেতনও বাড়ে। একজন দক্ষ ও পুরোনো কর্মী মাসিক ১.৫ লক্ষ থেকে ২.৫ লক্ষ টাকা বা তার বেশিও উপার্জন করতে পারেন। বিশেষ করে যারা ড্রাইভিং, কনস্ট্রাকশন বা কারখানার মতো কাজে দক্ষ, তাদের আয়ের সুযোগ অনেক বেশি।

এছাড়াও, ওভারটাইম করলে বা ভালো কোম্পানিতে চাকরি পেলে আয় আরও বাড়ে। তবে এটাও মনে রাখতে হবে যে, ইতালিতে জীবনযাত্রার খরচ, বিশেষ করে বড় শহরগুলোতে, বেশ বেশি। তাই বেতন যাই হোক না কেন, খরচের বিষয়টি মাথায় রেখে পরিকল্পনা করা উচিত।

আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না। নিয়মিত এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। অন্যান্য ইনফরমেশন সম্পর্কিত আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটের ক্যাটাগরি গুলো ঘুরে আসুন। এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আড্ডাভিউ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url