ব্লেন্ডার মেশিন দাম কত বাংলাদেশ ২০২৫ (আপডেট প্রাইজ)

আমরা অনেকেই জুস খেতে খুব পছন্দ করি। যখন রাস্তাঘাটে বের হয়ে তখন দেখি ফুটপাতে অনেক মানুষ জুস তৈরি করে বিক্রি করে। তাছাড়া বিভিন্ন দোকান বা রেস্টুরেন্টে জুস তৈরি করে বিক্রি করা হয় এসকল জুস আমি মনে করি স্বাস্থ্যকর নয়। তারা নষ্ট, পচা ও বাসি ফ্রুটস দিয়ে জুস তৈরি করতে পারে।
ব্লেন্ডার মেশিন দাম কত বাংলাদেশ
আপনি কি ২০২৫ সালে বাংলাদেশে ব্লেন্ডার মেশিনের দাম সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে এখনই এখানে থেমে যান, কেননা আমুরা আজকের এই পোষ্টে ২০২৫ সালের আপডেট তথ্য অনুযায়ী ৫টি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের ব্লেন্ডার মেশিনের দাম সম্পর্কে জেনে নিব।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ

ব্লেন্ডার মেশিন এর কাজ কি?

আপনি যদি বাজার থেকে একটি ব্লেন্ডার মেশিন কিনতে চান, তাহলে এর কাজ সম্পর্কে জেনে নেওয়া খুব জরুরি। ব্লেন্ডার মেশিনের প্রধান কাজ হলো পেঁয়াজ, রসুন, আদা, কাঁচা মরিচ, বাদাম এবং বিভিন্ন মসলা পিষে মসৃণ পেস্ট তৈরি করা। এছাড়াও, এটি দিয়ে বিভিন্ন ফল থেকে রস বের করে জুস তৈরি করা যায়।

আমরা সাধারণত মরিচের গুঁড়ো, হলুদের গুঁড়ো এবং অন্যান্য মসলা বাজার থেকে কিনে আনি। কিন্তু আপনার যদি ব্লেন্ডার থাকে, তাহলে আপনি আস্ত মরিচ, হলুদ, রসুন, আদা এবং কাঁচামরিচ দিয়ে মসৃণ গুঁড়ো বা পেস্ট তৈরি করে ব্যবহার করতে পারবেন।

এছাড়াও, গরমকালে আপেল, কমলা, আঙুর এবং কলা দিয়ে রস বের করে ছেঁকে ফলের জুস তৈরি করতে পারবেন। তাহলে আমরা বলতে পারি, ব্লেন্ডার মেশিনের মূল কাজ হলো মসলা জাতীয় জিনিস গুঁড়ো করে মসৃণ পেস্ট তৈরি করা এবং ফল থেকে রস বের করে জুস বানানো।

ব্লেন্ডার মেশিনের প্রকারভেদ ও দাম ২০২৫

ব্লেন্ডার মেশিনকে সাধারণত কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। প্রতিটি ভাগের দাম ও কার্যকারিতা আলাদা:
সাধারণ ব্লেন্ডার: এই ধরনের ব্লেন্ডারগুলো সাধারণত ১,৫০০ থেকে ৩,০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। এগুলো ফল ব্লেন্ড করে জুস তৈরি করার মতো সাধারণ কাজের জন্য উপযুক্ত। এগুলোতে সাধারণত একটি বা দুটি প্লাস্টিকের জার থাকে।

মিড-রেঞ্জ ব্লেন্ডার: এই ব্লেন্ডারগুলো ৩,০০০ থেকে ৬,৫০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। এগুলো দিয়ে ব্লেন্ডিং, গ্রাইন্ডিং এবং জুস তৈরির মতো একাধিক কাজ করা যায়। সাধারণত এগুলোতে একাধিক জার থাকে, যার মধ্যে একটি গ্রাইন্ডিং জারও অন্তর্ভুক্ত থাকে।

হাই-এন্ড বা উন্নতমানের ব্লেন্ডার: ৬,৫০০ টাকার উপরে যে ব্লেন্ডারগুলো পাওয়া যায়, সেগুলোর মোটর অনেক শক্তিশালী হয় এবং এগুলো দীর্ঘস্থায়ী হয়। এই ব্লেন্ডারগুলোতে সাধারণত অতিরিক্ত নিরাপত্তা ফিচার, মাল্টি-ফাংশনাল সুবিধা এবং আইস-ক্রাশিং-এর মতো কঠিন কাজ করার ক্ষমতা থাকে। এদের জারের মানও উন্নত হয়, যেমন- স্টেইনলেস স্টিলের জার।

ব্লেন্ডার মেশিন দাম কত বাংলাদেশ ২০২৫

২০২৫ সালে বাংলাদেশে ব্লেন্ডার মেশিনের দাম কত তা নিয়ে অনেকেই জানতে চান। সঠিক দাম বলা কঠিন, কারণ এটি বিভিন্ন ব্র্যান্ড, মডেল, কার্যকারিতা এবং বিক্রেতার উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। তবে একটি আনুমানিক ধারণা দেওয়া সম্ভব। সাধারণত, ভালো মানের একটি ব্লেন্ডার মেশিনের দাম ২,০০০ টাকা থেকে শুরু হয়ে ১৫,০০০ টাকা বা তারও বেশি হতে পারে।

ব্লেন্ডার মেশিনের দাম মূলত এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফিচারের ওপর নির্ভর করে। যেমন—মেশিনের মোটর কত ওয়াটের, জার বা পাত্রের সংখ্যা ও ধরন, এবং কী ধরনের কাজ করা যায়। বাংলাদেশে কিছু জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের ব্লেন্ডার রয়েছে, যেগুলো তাদের মান এবং কার্যকারিতার জন্য সুপরিচিত। নিচে ৫টি জনপ্রিয় ব্র্যান্ড এবং তাদের মডেলের দাম উল্লেখ করা হলো:

১। ভিশন
ভিশন ব্র্যান্ডের দুটি জনপ্রিয় ব্লেন্ডার মডেলের দাম নিচে দেওয়া হলো:
  • Vision VIS-SBL-021: এই মডেলটির দাম প্রায় ৪,৫০০ টাকা। এতে ৮৫০ ওয়াটের শক্তিশালী মোটর এবং একাধিক জার থাকে।
  • Vision VIS-SBL-022: প্রায় ৫,১০০ টাকা দামের এই মডেলটি ১,১০০ ওয়াটের মোটর এবং ৪-ইন-১ ফিচারসহ পাওয়া যায়।
২। ফিলিপস
ফিলিপস ব্র্যান্ডের দুটি জনপ্রিয় ব্লেন্ডার মডেলের দাম নিচে দেওয়া হলো:
  • Philips HL7757: এই মডেলটির দাম সাধারণত ৭,০০০ থেকে ৯,০০০ টাকার মধ্যে থাকে। এতে আছে ৭৫০ ওয়াটের শক্তিশালী মোটর এবং তিনটি জার, যা দিয়ে আপনি যেকোনো ধরনের ব্লেন্ডিং ও গ্রাইন্ডিংয়ের কাজ সহজে করতে পারবেন।
  • Philips HR2116: এই মডেলটির দাম প্রায় ৬,৫০০ টাকার আশেপাশে। জুস এবং মসলা তৈরির জন্য এটি বেশ জনপ্রিয়।
৩। প্যানাসনিক
প্যানাসনিক ব্র্যান্ডের দুটি জনপ্রিয় ব্লেন্ডার মডেলের দাম নিচে দেওয়া হলো:
  • Panasonic MX-AC300: এটি একটি উন্নতমানের মডেল, যার দাম প্রায় ১২,০০০ টাকা। এতে শক্তিশালী মোটর এবং তিনটি জার রয়েছে, যা সব ধরনের কাজ করার জন্য উপযুক্ত।
  • Panasonic MX-M210SSL: এই মডেলটির দাম প্রায় ৪,২০০ থেকে ৬,৫০০ টাকা। এটি প্রতিদিনের ব্যবহারের জন্য বেশ ভালো এবং এর ডিজাইনও আকর্ষণীয়।
৪। কিয়াম
কিয়ামের ব্লেন্ডারগুলো তাদের নির্ভরযোগ্যতা এবং সাশ্রয়ী মূল্যের জন্য বেশ পরিচিত। এদের ৩-ইন-১ ব্লেন্ডারগুলোও বেশ জনপ্রিয়।
  • Kiam BL-1400: এই মডেলটির দাম প্রায় ৪,০০০ থেকে ৫,০০০ টাকা। এটি সাধারণত তিনটি জারের সাথে আসে এবং প্রতিদিনের ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী।
৫। ওয়ালটন
ওয়ালটন বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় ব্র্যান্ড। তাদের ব্লেন্ডার মেশিনের দাম সাধারণত ২,০০০ থেকে ৬,০০০ টাকার মধ্যে থাকে, মডেল এবং ক্ষমতার উপর নির্ভর করে।
  • WBL-13MX35N ব্লেন্ডার মেশিনের দাম ২১৫৪ টাকা মাত্র।
  • WBL-10G140 এই মডেলটির দাম ৩০৭০ টাকা মাত্র।
  • WBL-15JM65N এই মডেলটির দাম ৪২০০ টাকা মাত্র।
  • WBL-VK10N এই মডেলটির দাম ৫৯৯০ টাকা মাত্র।
এখানে দেওয়া দামগুলো বিভিন্ন অনলাইন শপ এবং দোকানে কিছুটা ভিন্ন হতে পারে। তাই কেনার আগে বিভিন্ন জায়গা থেকে দাম যাচাই করে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। ব্লেন্ডার মেশিন কেনা আসলে একটি দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ, যা আপনার রান্নার কাজ অনেক সহজ করে তুলবে। তাই শুধু দাম না দেখে, আপনার প্রয়োজন এবং বাজেট অনুযায়ী সেরা ফিচারগুলো বেছে নেওয়া উচিত।

ব্লেন্ডার মেশিন ব্যবহারের নিয়ম

আপনি যদি বাজার থেকে ব্লেন্ডার মেশিন কিনে আনেন তাহলে এই মেশিনটি কিভাবে ব্যবহার করতে হয় সে সম্পর্কে জানা খুবই জরুরী । তাহলে আপনি এই মেশিন ব্যবহার করে সুবিধা করতে পারবেন । এখন কিভাবে মেশিনটি ব্যবহার করতে হয় সে সম্পর্কে নিচে তুলে ধরা হলোঃ
  • প্রথমে ব্লেন্ডার মেশিনের ভেতরটা পরিষ্কার করে নিন, যাতে কোনো ময়লা না থাকে।
  • এরপর বৈদ্যুতিক বোর্ডের সুইচ বন্ধ করে মেশিনের প্লাগ লাগান।
  • মেশিনের জারের মধ্যে ফল বা মসলা ছোট ছোট টুকরা করে রাখুন।
  • এবার সুইচ অন করে মেশিনটি চালু করুন।
  • মসলা বা ফল পুরোপুরি মেশানো না হওয়া পর্যন্ত ব্লেন্ডার চালু রাখুন।
  • উপকরণগুলো সম্পূর্ণ মিশ্রিত হলে সুইচ অফ এ চাপ দিয়ে মেশিনটি বন্ধ করে ফেলুন ।
উপরে যেভাবে এই মেশিন ব্যবহার করার নিয়ম তুলে ধরা হয়েছে আপনারা সেগুলো সঠিকভাবে ফলো করার চেষ্টা করবেন । তাহলে আশা করি আপনারা এই মেশিন ব্যবহার করে কোন রকম দুর্ঘটনায় পতিত হবেন না ।

ব্লেন্ডার কেনার আগে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

একটি ভালো ব্লেন্ডার কেনার আগে কিছু বিষয় বিবেচনা করা উচিত, যাতে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক মেশিনটি বেছে নিতে পারেন:

ওয়াটেজ ও মোটরের ক্ষমতা: ব্লেন্ডার মেশিনের ওয়াটেজ যত বেশি হবে, তার ক্ষমতাও তত বেশি হবে। মসলা গুঁড়ো করা বা বরফ ভাঙার মতো কঠিন কাজের জন্য কমপক্ষে ৭৫০ ওয়াটের ব্লেন্ডার কেনা উচিত।

জারের সংখ্যা ও ধরন: সাধারণত ব্লেন্ডারগুলো একাধিক জারসহ আসে। জুস বানানোর জন্য বড় জার, আর মসলা গুঁড়ো করার জন্য ছোট জার ব্যবহার করা হয়। কেনার আগে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী কতগুলো জার লাগবে এবং সেগুলো কোন মেটেরিয়ালের তা দেখে নিন। স্টেইনলেস স্টিলের জার বেশি টেকসই হয়।

ব্লেডের গুণগত মান: ব্লেডের গুণগত মান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভালো মানের স্টেইনলেস স্টিলের ব্লেড মসলা বা ফল ভালোভাবে পিষে মসৃণ করে।

নিরাপত্তা ফিচার: ভালো ব্লেন্ডার মেশিনে সাধারণত ওভারলোড প্রোটেকশন বা সার্কিট ব্রেকার, সেফটি লক এবং নন-স্লিপ ফুট-এর মতো নিরাপত্তা ফিচার থাকে। এই ফিচারগুলো দুর্ঘটনা রোধ করতে সাহায্য করে।

ওয়ারেন্টি: ভালো ব্র্যান্ডের ব্লেন্ডার কিনলে সাধারণত ১ থেকে ২ বছরের ওয়ারেন্টি পাওয়া যায়। এটি আপনাকে নিশ্চিন্তে পণ্য ব্যবহার করতে সাহায্য করবে।

ব্লেন্ডার মেশিন এর সুবিধা

ব্লেন্ডার মেশিন ব্যবহার করে আমরা বেশ কিছু সুবিধা পাই। আপনি যদি ইতিমধ্যেই ব্লেন্ডার ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে নিশ্চয়ই এই সুবিধাগুলো উপভোগ করছেন। তবে আপনি যদি নতুন ব্যবহারকারী হন, তাহলে কী কী সুবিধা পাবেন, তা নিচে আলোচনা করা হলো:
  • এই মেশিন ব্যবহার করলে খুব কম সময়ে খাবার তৈরি করা যায়, যা আমাদের মূল্যবান সময় বাঁচাতে সাহায্য করে।
  • এই মেশিনটি ব্যবহার করা খুবই সহজ । শুধুমাত্র সুইচ অন করলেই খাবার তৈরি হতে শুরু করে।
  • ব্লেন্ডার মেশিন ব্যবহার করে পুষ্টিকর খাবার তৈরি করা যায়।
  • বিভিন্ন ধরনের ফলের জুস বানাতে এটি আমাদের সাহায্য করে।
  • দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত বিভিন্ন মসলা যেমনঃ মরিচ, হলুদ, রসুন ও পেঁয়াজ গুড়া করে মসৃণ পেস্ট তৈরি করতে সহায়তা করে ।
উপরে উল্লেখিত যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা ছাড়াও আরো অসংখ্য সুযোগ সুবিধা পাবেন যদি আপনি এই মেশিনটি ব্যবহার করেন । তাই খুব অল্প সময়ে ফলের জোস অথবা মসলা গুড়া তৈরি করতে মেশিনটি ব্যবহার করতে পারেন ।

লেখকের শেষ মতামত

আমরা ব্লেন্ডার মেশিনের কাজ, কীভাবে এটি ব্যবহার করতে হয়, এর সুবিধা এবং কিছু জনপ্রিয় মডেলের দাম সম্পর্কে জানতে পারলাম। আপনি যদি ভবিষ্যতে কখনো ব্লেন্ডার মেশিন কিনতে চান, তাহলে উপরে আলোচনা করা মডেলগুলো থেকে যেকোনো একটি বেছে নিতে পারেন।

আশা করি, আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনার ভালো লেগেছে। যদি সামান্যতমও উপকৃত হন, তাহলে অবশ্যই বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে শেয়ার করবেন। এছাড়া এই পোস্টটি সম্পর্কে আপনার কোনো মতামত থাকলে তা অবশ্যই মন্তব্যে জানাবেন। আজ এখানেই শেষ করছি। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আড্ডাভিউ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url