১০০ ওয়াট সোলার প্যানেলের দাম কত ২০২৫ (আপডেট দাম)

আমাদের দেশে ইতিমধ্যে গরম পড়েছে । এই সময়ই প্রচুর পরিমাণে লোডশেডিং হয় । বিদ্যুৎ একবার চলে গেলে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত আসার কোন নাম গন্ধ থাকে না । এই সময় চারদিকে প্রচুর গরম অনুভুতি হয়। তখন আমাদের ঠান্ডা বাতাসের দরকার পড়ে । 
১০০ ওয়াট সোলার প্যানেলের দাম কত

এই দেশে গরমকালে প্রচূর গরম পড়ে তার উপরে আবার বাতাস খাওয়ার তেমন একটা সুযোগ নেই তাহলে কেমন পরিস্থিতি হতে পারে বলুন তো? নিঃসন্দেহে বলা যায় আপনি খুব বাজে একটি পরিস্থিতি উপভোগ করবেন। আমরা যদি এই গরম থেকে পরিত্রাণ লাভ করতে চাই তাহলে অবশ্যই বাতাস গ্রহণের ব্যবস্থা করতে হবে।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ

উপস্থাপনা

আমরা অনেকেই এই গরম থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য আইপিএস, চার্জার ফ্যান এবং সোলার প্যানেল ব্যবহার করি। কিন্তু সোলার প্যানেল ছাড়া আইপিএস কিংবা চার্জার ফ্যান ব্যবহার করলে তো আমাদের বাড়তি বিদ্যুৎ খরচ বহণ করতে হবে । 

কেননা সোলার প্যানেল সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ বিল বিহীন ব্যবহার করা যায়। আপনারা হয়তো জানেন যে এই প্যানেল শুধুমাত্র সৌরশক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে যার এতে আলাদা কোন ধরণের খঅরচ হয় না। । আপনি হয়তো এই গরম থেকে পরিত্রাণ পেতে চাচ্ছেন এবং আলাদা খরচ বহণ করতে চাচ্ছেন না। আর এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে সোলার প্যানেল। 

তাই আপনি যদি ১০০ ওয়াটের সোলার প্যানেল কিনতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে এই পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন । তাহলেই আপনার ১০০ ওয়াটের সোলার প্যানেল সম্পর্কিত সকল কনফিউশন দূর হয়ে যাবে । তো চলুন আমাদের মূল আলোচনায় যাওয়া যাক ।

১০০ ওয়াট সোলার প্যানেলের দাম কত

সাধারণত ১০০ ওয়াট সোলার প্যানেলের দাম ব্যাটারি ব্যাকআপের উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়ে থাকে। সবার প্রথমে আপনাকে এইটা নির্ধারণ করতে হবে যে আপনি বিদ্যুৎ না থাকা অবস্থায় কত ঘন্টা পর্যন্ত ব্যাটারি ব্যাকআপ চাচ্ছেন। কেননা আপনি যদি অল্প সময় ব্যাটারি ব্যবহার করেন তাহলে কম টাকা খরচ করতে হবে । কিন্তু যদি মনে করেন আপনার বেশি সময় ধরে বিদ্যুতের দরকার তাহলে ভালো মানের ব্যাটারি কিনতে হবে ।
বর্তমানে ভালো এবং দীর্ঘস্থায়ী সার্ভিস দিয়ে আসছে এমন বেশ কিছু ব্যাটারি কোম্পানি রয়েছে। যেমন হিম আফরোজ সোলার ব্যাটারি হামকো সোলার ব্যাটারি। এখান থেকে আপনি যদি ভালো মানের ব্যাটারি কিনেন তাহলে বিদ্যুৎ না থাকা অবস্থাতেও দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারবেন । কিন্তু আপনি যদি নরমাল ব্যাটারি ব্যবহার করেন তাহলে কিন্তু দীর্ঘ সময় ব্যবহার করতে পারবেন না ।

কোম্পানি ভেদে এখনকার বাজারে ১০০ ওয়াটের সোলার প্যানেলের দাম ভিন্ন হয়ে থাকে যেমন আপনি ১০০ ওয়াটের জন্য ২২,০০০ টাকা খরচ হবে আর অন্যদিকে রহিম আফরোজ কোম্পানির কিনলে ৭০০০ টাকায় কিনতে পারবেন।

তাই সবার প্রথমে আপনার বাজেটের দিকে নজর দিতে হবে এবং তারপর আপনি আসলে কি পরিমাণ ব্যাটারি ব্যাকআপ দরকার সেই অনুযায়ী নির্ধারণ করে নিন । তাহলেই আমি মনে করি ১০০ ওয়াটের প্যানেল সঠিক এবং ন্যায্য দামে কিনতে পারবেন ।

১০০ ওয়াট সোলার প্যানেলে কি কি চালানো যাবে

১০০ ওয়াটের সোলার প্যানেল দিয়ে কী কী চালানো যাবে, তা নির্ভর করে কয়েকটি বিষয়ের ওপর। প্রথমত, সূর্যের আলোর পরিমাণ এবং দ্বিতীয়ত, প্যানেলের সাথে ব্যাটারি ও ইনভার্টার আছে কিনা। সহজভাবে বলতে গেলে, এটি একটি ছোটখাটো পরিবারের জরুরি প্রয়োজন মেটানোর জন্য যথেষ্ট।

বাজার থেকে ১০০ ওয়াটের সোলার প্যানেল কিনার আগে আমাদের অবশ্যই জানা দরকার এই প্যানেল দিয়ে কি কি ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস চালানো যাবে । তাহলেই আমরা বুঝতে পারবো আমাদের চাহিদার সাথে এই প্যানেলের কোন মিল রয়েছে কিনা । এখন নিচে এই প্যানেল দিয়ে কি কি ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস চালানো যাবে তা উল্লেখ করা হলোঃ
  • মোবাইল ফোন
  • ট্যাবলেট
  • ল্যাপটপ চার্জ করা
  • ছোট ফ্যান
  • রেডিও চালানো
  • LED লাইট
  • ছোট ওয়াটার পাম্প
উল্লিখিত ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসগুলো ১০০ ওয়াট সোলার প্যানেলের সাহায্যে ব্যবহার করে চালাতে পারবেন। আর যদি আপনার আরও ভাড়ি কোন ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় তাহলে একটু বাজেট বাড়িয়ে ৫০০ ওয়াট অথবা ১ হাজার ওয়াটের সোলার প্যানেল কিনতে হবে।

আর ১০০ ওয়াটের সোলার প্যানেলটি মূলত ছোটখাটো লোড চালানোর জন্য ব্যভার করা হয়। এটি দিয়ে ফ্রিজ, এসি বা বড় কোনো ইলেকট্রনিক জিনিস চালানো সম্ভব নয়। এটি মূলত লোডশেডিং-এর সময় বা বিদ্যুতের সংযোগ নেই এমন জায়গায় হালকা আলো, ফ্যান ও চার্জিংয়ের প্রয়োজন মেটানোর জন্য খুব কার্যকর একটি সমাধান।

১০০ ওয়াট সোলার প্যানেল কতটুকু বিদ্যুৎ উৎপাদন করে

আমাদের অনেকে জানতে চান ১০০ ওয়াট সোলার দিয়ে কতটুকু বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব । হ্যাঁ, এই বিষয়টি সম্পর্কে আপনার জেনে রাখা অতীব জরুরি । কেননা ধরুন আপনার কোন পরিবারের সদস্য বলল যে তোমার বাড়িতে তো ১০০ ওয়াটের সোলার প্যানেল আছে তাহলে আমাকে একটা প্রশ্নের উত্তর দাও সেটা হল তোমার প্যানেল কতটুকু বিদ্যুৎ উৎপাদন করে?

আর আপনি যদি এই প্রশ্নের উত্তর না জানেন তাহলে দেখবেন দিব্বি আপনাকে নিয়ে হাসাহাসি করবে। তাহলে আপনাকে নিশ্চয় এই প্রশ্নের উত্তর জানতে হবে। আসুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে এই প্রশ্নের উত্তরের দিকে অগ্রসর হই।

যদিও পরিমাপটা একেবারে নিখুত ভাবে বলা কঠিন তবুও আপনাদের জেনে রাখা দরকার। ১০০ ওয়াট সোলার প্যানেল 0.8 kWh বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। এই পরিমাপ যদিও সূর্য শক্তির উপর ভিত্তি করে কম বেশি হতে পারে। যেই দিন সূর্য বেশি আলো দেয় ঐ দিন বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে । আবার যেদিন ঝড় অথবা বৃষ্টি থাকবে সেদিন বিদ্যুৎ কম উৎপাদন হবে ।

১০০ ওয়াট সোলার প্যানেলে কত ভোল্টের ব্যাটারি দরকার

আমরা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি একটি ভালো মানের ব্যাটারি আপনাকে লম্বা সময় ধরে বিদ্যুতের বিকল্প হিসেবে সার্ভিস দিতে সহায়তা করবে। আপনার মনে একটা প্রশ্ন জাগতেই পারে যে ১০০ ওয়াটের সোলার প্যানেল চালালে কত ভোল্টের ব্যাটারি দরকার হবে। এই প্রশ্নের উত্তর হল ব্যাটারির ভোল্ট নির্ধারণ আপনি আসলে কত ঘন্টা ব্যাকআপ যাচ্ছেন তার উপরে ভিত্তি করে।
আপনি যদি অল্প সময় ধরে ব্যাটারি ব্যাকআপ চান তাহলে ৬ ভোল্টের ব্যাটারি নিতে পারেন । কিন্তু আপনি যদি চান বিদ্যুৎ না থাকা অবস্থায় লম্বা সময় ধরে বিদ্যুতের বিকল্প সার্ভিস ব্যবহার করবেন তাহলে আপনাকে ১২ ভোল্টের ব্যাটারি অবশ্যই নিতে হবে । তাহলে আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে পারবেন ।

১০০ ওয়াট সোলার প্যানেলে কেনার সময় কিছু টিপস

১০০ ওয়াটের একটি সোলার প্যানেল কেনা একটি দারুণ সিদ্ধান্ত, বিশেষ করে যদি আপনি ছোটখাটো বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে চান। তবে কেনার আগে কিছু বিষয় মাথায় রাখলে আপনি সঠিক জিনিসটি কিনতে পারবেন এবং ঠকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। মানুষের মতো করে কিছু টিপস নিচে দেওয়া হলো:

১। আপনার প্রয়োজন বুঝুন

প্রথমে নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, আপনি এই প্যানেলটি দিয়ে কী কী চালাতে চান? শুধু মোবাইল চার্জ, নাকি একটি ফ্যান ও লাইটও চালাতে চান? যদি শুধু হালকা লোড চালাতে চান, তবে ১০০ ওয়াটের একটি প্যানেলই যথেষ্ট। কিন্তু যদি এর চেয়ে বেশি কিছু চালাতে চান, তবে আরও বড় প্যানেল বা একাধিক প্যানেল কেনার কথা ভাবতে পারেন।

২। সোলার প্যানেলের ধরণ যাচাই করুন

সাধারণত দুই ধরনের সোলার প্যানেল বাজারে পাওয়া যায়:

মনোক্রিস্টালাইন: এটি কালো রঙের হয় এবং এর কার্যকারিতা (Efficiency) বেশি। অর্থাৎ, এটি কম জায়গা নিয়ে বেশি বিদ্যুৎ তৈরি করতে পারে। যদি আপনার ছাদে বা জায়গায় কম থাকে, তাহলে এটিই সেরা পছন্দ। তবে এর দাম কিছুটা বেশি।

পলিক্রিস্টালাইন: এটি নীল রঙের হয় এবং দাম কিছুটা কম। যদি আপনার বাজেট কম থাকে এবং প্যানেল বসানোর জন্য যথেষ্ট জায়গা থাকে, তাহলে এটি ভালো বিকল্প হতে পারে।

৩। ব্র্যান্ড এবং ওয়ারেন্টি দেখুন

পরিচিত ব্র্যান্ডের প্যানেল কেনা সবসময়ই ভালো। রহিম আফরোজ, সুপার স্টার, সোলার টেকনো-এর মতো ব্র্যান্ডগুলো বাজারে বেশ জনপ্রিয়। ভালো ব্র্যান্ডগুলো দীর্ঘমেয়াদী ওয়ারেন্টি এবং বিক্রয়োত্তর সেবা দিয়ে থাকে। প্যানেলের ওয়ারেন্টি সাধারণত ২০-২৫ বছর পর্যন্ত হতে পারে। তাই কেনার সময় ওয়ারেন্টির কাগজপত্র ভালোভাবে দেখে নিন।

৪। সঠিক বিক্রেতা নির্বাচন করুন

যেকোনো দোকান থেকে না কিনে, চেষ্টা করুন অনুমোদিত ডিলার বা স্বনামধন্য দোকান থেকে কিনতে। এতে পণ্যের মান নিয়ে নিশ্চিন্ত থাকা যায় এবং ওয়ারেন্টি সংক্রান্ত কোনো সমস্যা হলে সহজে সমাধান করা যায়। অনলাইনে কেনার ক্ষেত্রে বিক্রেতার রেটিং ও রিভিউ দেখে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।

৫। অন্যান্য যন্ত্রাংশ সম্পর্কে জানুন

শুধু সোলার প্যানেল কিনলেই হবে না। পুরো সিস্টেম চালানোর জন্য আরও কিছু জিনিস লাগে, যেমন:
  • ব্যাটারি: বিদ্যুৎ জমা রাখার জন্য ব্যাটারি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে রাতের বেলায় বা মেঘলা দিনে ব্যবহারের জন্য।
  • চার্জ কন্ট্রোলার: এটি ব্যাটারিকে অতিরিক্ত চার্জ বা ডিসচার্জ হওয়া থেকে রক্ষা করে।
  • ইনভার্টার: যদি আপনার বাড়ির যন্ত্রপাতিগুলো এসি কারেন্টে চলে, তাহলে ডিসি কারেন্টকে এসিতে রূপান্তর করার জন্য একটি ইনভার্টার লাগবে।
এই যন্ত্রাংশগুলোর মান এবং সামঞ্জস্যতা সম্পর্কে বিক্রেতার সাথে কথা বলুন।

৬। দামের তুলনা করুন

কেনার আগে কয়েকটি দোকান বা ওয়েবসাইটে দাম যাচাই করে নিন। এতে আপনি বাজারের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং সবচেয়ে ভালো দামে পণ্যটি কিনতে পারবেন। তবে শুধু দাম কম হলেই কিনবেন না, পণ্যের মান এবং ওয়ারেন্টিকেও গুরুত্ব দিন।

এই টিপসগুলো অনুসরণ করলে আপনি ১০০ ওয়াটের একটি সোলার প্যানেল কেনার সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।

আমাদের শেষ মতামত

পরিশেষে, ১০০ ওয়াট সোলার প্যানেলের দাম সাধারণত ৭,০০০ টাকা শুরু করে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। দামের এই ভিন্নতা নির্ভর করে প্রধানত মনোক্রিস্টালাইন নাকি পলিক্রিস্টালাইন। রহিম আফরোজ, সুপার স্টার-এর মতো স্বনামধন্য ব্র্যান্ডের দাম কিছুটা বেশি হয়। স্থান এবং বিক্রেতার উপর ভিত্তি করে দামে কিছুটা পার্থক্য দেখা যায়।

কেনার সময় শুধু দামের দিকে না তাকিয়ে প্যানেলের কার্যকারিতা, ওয়ারেন্টি এবং বিক্রেতার বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করে নেওয়া উচিত। এটি ছোটখাটো বিদ্যুৎ চাহিদার জন্য একটি কার্যকরী ও সাশ্রয়ী সমাধান।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আড্ডাভিউ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url